বানরের তাণ্ডবে খাঁচাবন্দি মানুষ
থাইল্যান্ডের লোপবুরির বাসিন্দারা বানরের তাণ্ডবে ‘খাঁচাবন্দি’ হয়ে বসবাস করছেন। এসব বানরের দলগুলো রীতিমতো মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। তারা মানুষ চলাচলমুক্ত অঞ্চল তৈরিতে লড়াই অব্যাহত রেখেছে। প্রাচীন থাই শহরটিতে দিন দিন বানরের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বানরগুলো জাঙ্ক ফুডের ওপর বেশ আসক্ত। পর্যটকদের দেয়া কলাও তারা খুব পছন্দ করে। করোনা মহামারির কারণে পর্যটকদের আনাগোনা বন্ধ থাকায় খাবারের জন্য হিংস্র হয়ে উঠেছে বানরগুলো।
এদিকে বানরগুলোর হামলা থেকে সুরক্ষা হিসেবে মাথায় নেটের জাল পরে আছেন লোপবুরির বাসিন্দা কুলজিরা তাই চাওয়া তানাওয়ান্না।
তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা খাঁচায় থাকি আর বানররা বাইরে থাকে। তাদের মলমূত্র সর্বত্রই রয়েছে। বৃষ্টির হলে গন্ধ অসহনীয় হয়ে ওঠে।’ ত্রয়োদশ শতাব্দীর এ নগরীতে বসবাস করেন কুলজিরা।
গত মার্চে বানরের দল রাস্তায় খাবার নিয়ে ঝগড়া করছে এমন একটি ভিডিওফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। তিন বছরে বানরের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
ফলে তাদের তাণ্ডব এখন অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। শহরের একটি পরিত্যক্ত সিনেমা হল বানরদের সদর দফতর। কাছের একটি দোকানের মালিক বানরদের ভয় দেখাতে বাঘ ও কুমিরের খেলনা রেখেছেন। তাতেও কাজ হচ্ছে না। প্রতিদিনই বানরের দল তার দোকান থেকে খাবার চুরি করছে।
শহরের বাসিন্দারা বানরের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ। প্রাং সাম ইয়োদ মন্দিরের আশপাশের মন্দিরগুলো পরিচালনাকারী প্রামত কেটাম্পাই বলেন, বানরেরা যত বেশি খায়, তত বেশি শক্তি তাদের। তাই তারা আরও বেশি প্রজনন করে।
ফলে থাইল্যান্ডের লোপবুরি প্রদেশ বানরের স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে।
সুপকরন নামে একজন ভেটেরেনারি সার্জন বলছিলেন, পর্যটকরা চলে যাওয়ার পরেই তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। বাঁচার জন্য তারা খাবার নিয়ে মানুষের সঙ্গে লড়াই করছে। তারা ভবনগুলোতে আক্রমণ করছে এবং স্থানীয়দের তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করছে।
ফলে এদের বংশবৃদ্ধি রহিত করার জন্য স্থায়ী জন্মবিরতিকরণ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, যা লাইগেশান বা ভেসেকটমি নামে পরিচিত।
যদিও ওই ভেটেরেনারি সার্জন বলছেন, এতে করে বানরগুলোর সংখ্যা কমবে না। তবে জন্মহার কমে যাবে।