চাকরি হারিয়ে বিবিএ-এমবিএ ডিগ্রিধারীরাও কৃষি কাজ করছে
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের ফলে অসংখ্য মানুষ কর্মহীন ও কর্মজীবী চাকরি হারিয়েছেন। ভারতে এই হিসাবটা সবচেয়ে বেশি। এবার দেশটিতে চাকরি হারিয়ে অনেক বিবিএ-এমবিএ শিক্ষার্থীরা এখন মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি অ্যাক্ট (এমজিএনআরইজিএ) এর অধীনে চাকরির করছেন ও চাকরি পেতে অপেক্ষা করছেন।
এনডিটিভি সূত্রমতে, গত ১ এপ্রিল থেকে সারাদেশে কমপক্ষে ৩৫ লাখ মানুষ এই স্কিমে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন, যা এই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমনই একজন হলেন রাজধানী থেকে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশের একটি গ্রামের রওশন কুমার। স্নাতকোত্তর দুটিই সম্পন্ন করা তরুণ যিনি এখন পুকুর খনন এবং পল্লী রাস্তা মেরামতের মতো কাজে শ্রম দিতে ইচ্ছুক।
বিবিএ ডিগ্রিধারী সতেন্দ্র কুমারও তাদের দলে। তিনি বলছেন, আমি বিবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছি। কিন্তু দীর্ঘদিন চাকরি পাচ্ছিলাম না। অবশেষে ৬-৭ হাজার রুপি মাসের একটি চাকরি যোগাড় করতে সমর্থ হই। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেটাও চলে গেছে। ফলে আমি আমার গ্রামে ফিরে এসে গ্রাম প্রধানের সহযোগিতায় এখানে কাজ করছি।
এমএ স্নাতক, সাথে বিএড ডিগ্রি করা সুরজিৎ কুমারেরও একই দশা হয়েছে। তিনি বলছেন, তার এছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না। লকডাউনের কারণে অন্য চাকরি জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়েছে তার পক্ষে।
লকডাউনের আগে এই স্কিমের অধীনে এই গ্রামে কর্মী ছিলো ২০ জন। এখন এই সংখ্যা প্রতিদিন ১০০ জন এর বেশি হয়ে গেছে, যাদের মধ্যে কমপক্ষে এক পঞ্চমাংশ ডিগ্রিধারী, যারা লকডাউনের ফলে চাকরি হারিয়েছেন কিংবা চাকরি যোগাড় করতে পারেননি।
এর আগে করোনা পরিস্থিতিতে দেশটির উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার রাজ্যে ৩০ লাখ অভিবাসীকে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছে।
জুনাইদপুরের গ্রামীণ প্রধান বীরেন্দ্র সিং বলছেন, লকডাউনের পর চাকরি ও জীবিকা হারা অনেকে এই স্কিমে কাজের জন্য আবেদন করেছেন, যা আগের চেয়ে অনেক বেশি।
সারাদেশে প্রায় ১৪ কোটি মানুষের এই স্কিমে কাজ করার কার্ড আছে। কার্ডধারীরা এর অধীনে ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি পেয়ে থাকে, তবে প্রত্যেকে কাজ দিতে গেলে ২.৮ লক্ষ কোটি রুপি সরকারের বাজেট নির্ধারণ করতে হবে এই বছর।
অর্থনীতিবিদ রিতিকা খেরা বলেছেন, এই স্কিমে চাকরি কার্ড পাওয়াদের চাকরি নিশ্চিত করার জন্য আরও বাজেটের প্রয়োজন। সরকারের এই বিষয়টি নিশ্চিত করা উচিত যে, এর অধীনে প্রত্যেক ব্যক্তিই কাজ পাবে।
তবে গত মাসে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের অতিরিক্ত ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।