লকডাউনে খাবার শেষ, দুধের শিশুকে বিক্রি করলেন বাবা-মা
মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের ফলে এক শ্রেণীর মানুষদের বেড়েছে অভাব, চিৎকার, আর হাহাকার। এমন পরিস্থিতিতে এবার আড়াই মাসের কন্যাসন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠল বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের।
গত মঙ্গলবার রাতে শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সুস্থই রয়েছে ওই শিশুকন্যা। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, এক শিশুকন্যাকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আইনানুগ পদক্ষেপ করা হয়েছে।
চাইল্ড লাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটর বিশ্বনাথ সামন্ত বলেন, অভাবের তাড়নায় শিশুকন্যাকে বিক্রি খুবই লজ্জাজনক ঘটনা। মানুষকে আমরা সচেতন করতে পারিনি।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, ঘাটাল শহরের কোন্নগর এলাকার রুইদাস গ্রামের বাসিন্দা বাপন ধাড়া ও তাঁর স্ত্রী তাপসীর বছর পাঁচেকের ছেলে এবং বছর আড়াইয়ের মেয়ে রয়েছে। বাপনের কোনও রোজগার নেই। তাপসী পরিচারিকার কাজ করেন। লকডাউনে তাপসীর রোজগারও বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে আড়াই মাস আগে ঘাটাল হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তাপসী। সন্তান জন্মানোর পরই স্বামী-স্ত্রীয়ের ঝগড়া বাড়তে থাকে। তখনই সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন দম্পতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুকন্যা হস্তান্তর হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে নামে। ঘাটাল থানার এক অফিসার চাইল্ড লাইনের আধিকারিককে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই শ্যামপুরের গ্রাম থেকে উদ্ধার করেন শিশুশিশুকে।
ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, শিশুকন্যা যাতে ভাল ভাবে মানুষ হয়, তাই হাওড়ার দম্পতি তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর হয়নি। এদিকে এ ঘটনায় বাবা, মা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।