ঝড়ে বিধ্বস্ত কলেজ স্ট্রিট, ভিজে গেল নতুন শিক্ষাবর্ষের বই
ঘূর্ণিঝড় আম্ফনের তান্ডবে কলকাতার প্রধান বই প্রকাশনা ও বিক্রয় কেন্দ্র কলেজ স্ট্রিট লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে আগে ছাপানো নতুন শিক্ষাবর্ষের বই। লকডাউন চালু হওয়ার জেরে এসব বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়ায় বহু দোকানে, প্রেসে এবং গুদামে অন্য বইয়ের সঙ্গে মজুত করা ছিল নতুন বছরের এসব পাঠ্যপুস্তক।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, আম্ফনের তাণ্ডবে অংসখ্য বই নষ্ট হয়ে গেছে। কোটি কোটি টাকা লোকসানের মুখে বইপাড়া।
কলেজ স্ট্রিটের বই ব্যবসায়ী ও প্রকাশকেরা জানিয়েছেন, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তাঁরা আগে দেখেননি। সব মিলিয়ে যত টাকার বই নষ্ট হয়েছে তার পুরো আন্দাজ এখনও পাওয়া যায়নি।
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে বৃষ্টির তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে দোকানগুলির শাটারের ভিতর দিয়ে, দরজার ভিতর দিয়ে, জানলার ফাঁক দিয়ে জল ঢুকে যায়।’’
ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানান, লকডাউনের জেরে ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছিলই। আম্ফান সেই ক্ষতি বাড়িয়ে দিয়েছে বহু গুণ। আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, বহু বই ব্যবসায়ী হয়তো আর ঘুরে দাঁড়াতেই পারবেন না। তাই কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ার ব্যবসায়ীরা আর্থিক সাহায্য চেয়ে শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও চিঠি লিখেছেন।
তিনি জানান, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় পৃথিবীর বহু দেশ অংশগ্রহণ করে। সে সব দেশের মানুষ, প্রকাশকদের এবং বিশিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বইপাড়ার তরফ থেকে তাঁরা সাহায্যের আবেদন করবেন। আম্ফনের কথা জানতে পেরে ইতিমধ্যেই কয়েক জন বিদেশ থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
লকডাউনের জন্য এখন বইপাড়া বন্ধ থাকায় আম্ফনে ক্ষতি আরও বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েক জন প্রকাশক। বুলবুল ইসলাম নামে এক প্রকাশক জানান, যাঁদের দূরে বাড়ি, তাঁরা অনেকেই লকডাউনের জন্য বাড়ি চলে গিয়েছেন। তাই ঝড়ের পরে কলেজ স্ট্রিট আসতেও পারেননি তাঁরা। দেরি হওয়ার কারণে ভেজা বই উদ্ধার করার যেটুকু সম্ভাবনা ছিল, সেটুকুও নষ্ট হয়ে যায়।
পাঠ্যবইয়ের এক প্রকাশক দোলগোবিন্দ পাত্র জানান, লকডাউনের জন্য এত দিন তাঁরা কলেজ স্ট্রিটে আসতে পারেননি। ঘূর্ণিঝড়ের পরে বইপাড়ায় এসে দোকানের অবস্থা দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।