রমজানে জামাতে নামাজ না পড়ার আহবান সৌদি আলেমদের
সৌদি আরবের শীর্ষ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সারা পৃথিবীর মুসলিমদের প্রতি আহবান জানিয়েছে, যেন তারা করোনাভাইরাস বিস্তার ঠেকানোর স্বার্থে আসন্ন রমজান মাসে এক জায়গায় জমায়েত হয়ে তথা জামাতে নামাজ না পড়েন।
রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত সৌদি প্রেস এজেন্সির খবরে বলা হয়, দেশটির উর্ধতন আলেমদের কাউন্সিল বলেছে, যেহেতু এক জায়গায় অনেক লোকের সমাগমই সংক্রমণ ছড়ানোর প্রধান কারণ, তাই মুসলিমদের উচিত হবে এরকম জমায়েত এড়িয়ে চলা।
সুন্নি– সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টায় মক্কায় অবস্থিত মুসলিমদের পবিত্রতম মসজিদসহ দেশের মসজিদগুলো বন্ধ করে দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে কমপক্ষে চার হাজার ৯০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং গত ১৪ এপ্রিলের হিসেব অনুযায়ী সেখানে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র দুটি স্থান, মক্কা এবং মদিনায় অবস্থিত দুই মসজিদের বাইরের চত্বরে নামাজ পড়া স্থগিত করা হয় গত ২০ মার্চ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ এ ব্যবস্থা নেয় বলে জানানো হয়। মসজিদ চত্ত্বরে প্রতিদিনের নামাজের পাশাপাশি জুমার নামাজও স্থগিত করা হয়।
অন্যদিকে পাকিস্তানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানো রোধ করার চেষ্টায় মসজিদে এসে নামাজ পড়া বন্ধ রাখতে কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করলেও দেশটির কোথাও কোথাও ধর্মীয় নেতারা তা অমান্য করা শুরু করেছিলেন।
এরই মধ্যে শনিবার পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির শীর্ষস্থানীয় কিছু ধর্মীয় নেতা একমত হয়েছেন, আসন্ন রমজান মাসে দেশটির মসজিদগুলো খোলা রাখা যেতে পারে- যদি স্বাস্থ্যগত নীতিমালা মেনে চলা হয়। ইসলামাবাদে দীর্ঘ এক বৈঠকের পর এ ঐকমত্য হয়।
এসব নিয়মকানুনের মধ্যে আছে- নামাজ পড়তে আসা লোকদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ফেসমাস্ক পরা এবং যেখানে সম্ভব বাইরে নামাজ পড়া। তা ছাড়া বয়স্ক ও অসুস্থ লোকদের মসজিদে আসা উচিত হবে না বলেও বলা হয়।
আগামী সপ্তাহ থেকে রমজান মাস শুরু হবার আগে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ দৃশ্যত: ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আরোপ করা বিধিনিষেধের মধ্যে একটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে শিয়া-প্রধান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনি বলেছেন, যদি স্বাস্থ্যগত ক্ষতির ঝুকি থাকে তাহলে মুসলিমদের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখাটাও বাধ্যতামূলক নয়।
ইরানে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ৭৪ হাজার লোক করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন এবং চার হাজার ৬৮০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছেন। যদিও অন্য কিছু সূত্রে মৃতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে দাবি করা হয়। খবর: বিবিসি বাংলা।