ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করল পাকিস্তান
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করার কথা জানানো হয়েছে। বহিষ্কার করা হয়েছে পাকিস্তানে থাকা ভারতীয় কূটনীতিকদের।
গতকাল বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে ভারত এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে বেসামরিক ও সামরিক পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জম্মু-কাশ্মীরের বিষয়ে ভারতের নেওয়া সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান।
এছাড়া কাশ্মীরকে সহায়তা করে তাদের পাশে থাকতে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাশ্মীরে ভারতের ‘বর্ণবাদী’ শাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সব ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। বৈঠকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের পাশাপাশি পাকিস্তানে ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সভাপতিত্বে দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মোট পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে শিগগিরই তা জাতিসংঘে উত্থাপন করা হবে।
বৈঠকে তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কগুলো খতিয়ে দেখতে বলেছেন। এ সিদ্ধান্তের কথা পাকিস্তান সরকারের টুইটার অ্যাকাউন্টে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশী বলেছেন, ‘নয়াদিল্লিতে আমাদের রাষ্ট্রদূত আর থাকছে না। এছাড়া এখানে থাকা ভারতীয় কূটনীতিকদেরও ফেরত পাঠানো হবে।’
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে পাকিস্তানের বৈদেশিক সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান, চিফ অব আর্মি স্টাফ, চিফ অব এয়ার স্টাফ, ভাইস চিফ অব নাভাল স্টাফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত সোমবার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের ঘোষণার আগে থেকেই সেখানে বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পুরো উপত্যকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিক্ষোভের খবরও শোনা যাচ্ছে।
ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও প্রতিরক্ষা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ওই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু সেসব রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারির মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার বাতিল করে দিয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই টুকরো করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে লাদাখকে বের করে তৈরি করা হয়েছে নতুন এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এছাড়া জম্মু-কাশ্মীরের এখন থেকে পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে।