চলে গেলেন নোবেলজয়ী সাহিত্যিক টনি মরিসন
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০১৯, ১১:৫১ AM , আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০১৯, ১১:৫১ AM
কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের জীবন নিয়ে লিখে আলোচনায় আসা সাহিত্যিক টনি মরিসন মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গত সোমবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মন্টিফিওরে মেডিকেল সেন্টারে ৮৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম আফ্রিকান–আমেরিকান নারী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন তিনি।
টনি মরিসনের পরিবার মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে আমরা জানাচ্ছি যে অল্প সময়ের অসুস্থতার পর আমাদের প্রিয় মা ও দাদি টনি মরিসন গত রাতে আমাদের ছেড়ে চিরদিনের মতো চলে গেছেন। তাঁর অন্তিম মুহূর্তে তাঁর পাশে ছিলেন স্বজন ও বন্ধুরা। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। তবে আমরা কৃতজ্ঞ, তিনি দীর্ঘ জীবন পেয়েছেন এবং শেষ দিন পর্যন্ত সুস্থ অবস্থায় বেঁচে ছিলেন।’
বিবৃতিতে টনি মরিসনকে ‘নিখুঁত লেখক’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যিনি ‘অক্ষরসম্পন্ন বিশ্বকে সমৃদ্ধ করেছেন’। পরিবারের পক্ষ থেকে টনি মরিসনের মৃত্যুর খবর জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার পর দ্রুতই তা ছড়িয়ে পড়ে। প্রিয় লেখকের প্রতি শ্রদ্ধার ঢল নামে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশনা সংস্থা নফ পাবলিশার্সে টনি মরিসনের দীর্ঘদিনের সম্পাদক রবার্ট গটলিয়েব বিবৃতিতে বলেন, ‘তিনি (টনি মরিসন) ছিলেন অসাধারণ এক নারী ও লেখক। আমি বলতে পারব না, এই দুই সত্তার মধ্যে কোনটি আমার বেশি মনে পড়বে।’
নফের চেয়ারম্যান সোনি মেহতা বলেন, ‘যে গুটিকয় লেখক আমেরিকান সাহিত্যে এতটা মানবিকভাবে কিংবা ভাষার প্রতি দরদ নিয়ে লিখে গেছেন, টনি তাঁদের একজন। তাঁর বর্ণনাশৈলী আর সম্মোহনী গদ্য আমাদের সংস্কৃতিতে অমোচনীয় চিহ্ন তৈরি করেছে।’
টনি মরিসনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে, ১৯৩১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’। তিন বছর পর ১৯৭৩ সালে বের হয় দ্বিতীয় উপন্যাস ‘সুলা’। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় তাঁর আরও নয়টি উপন্যাস।
১৯৮৭ সালে প্রকাশিত ‘বিলাভেড’ উপন্যাসের জন্য পরের বছরই তিনি পুলিৎজার পুরস্কার পান। একই উপন্যাসের জন্য পান আমেরিকান বুক অ্যাওয়ার্ড। ১৮৬০ সালের একজন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকার কঠোর জীবন ছিল এ উপন্যাসের বিষয়বস্তু।
টনি মরিসন ১৯৯৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। মার্কিন সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে পান ন্যাশনাল বুক ফাউন্ডেশনের মেডেল অব ডিস্টিংগুইশড কন্ট্রিবিউশন সম্মাননা। ২০১২ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডমে ভূষিত করেন।
কর্মজীবনে টনি মরিসন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে পড়িয়েছেন। কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশনা সংস্থা র্যানডম হাউসে সম্পাদক হিসেবে।