‘জয় শ্রীরাম’ নয়, ‘আল্লাহ’ বলে চিৎকার দেওয়ায় চালককে মারধর
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৮ জুন ২০১৯, ০৬:০০ PM , আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯, ০৬:০০ PM
ভারতজুড়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনা সামনে আসছে। এবার এক মুসলিম ক্যাব চালককে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে বলা হলে তিনি আল্লাহ বলে চিৎকার দেয়ায় অজ্ঞাত স্কুটারদ্বারী তিন যুবক তাকে বেধড়ক মারধর করে।
এরআগে কয়েক মাস আগেই ঝাড়খণ্ডে এক মুসলিম যুবককে চোর সন্দেহে বেধড়ক মারধর করা হয়। সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে জোর করা হয় তাকে। একটানা ১৮ ঘণ্টা অত্যাচারের জেরে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সী ওই যুবকের মৃত্যু হয়। তার আগে আসামেও একই ঘটনা ঘটেছে। এবার একই ঘটনা ঘটেছে মুম্বাইয়ের থানেতে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার থানের ডিভা এলাকায় ২৫ বছরের এক মুসলিম ক্যাব চালককে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে জোর করে তিন ব্যক্তি। তারপরই তাকে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় গত মঙ্গলবারই তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা আগাসন গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
মারধরের শিকার ২৫ বছর বয়সী ফৈজল উসমান খান জানান, গত বছর ডিসেম্বর থেকে তিনি একটি ক্যাব সংস্থায় চালকের কাজ করছেন। গত সোমবার রাত তিনটার দিকে ডিভার একটি হাসপাতাল থেকে যাত্রী নিয়ে মুম্বাইয়ের দিকে আসছিলেন তিনি। তখনই তার গাড়িটি খারাপ হয়ে যায়। ফৈজল বলেন, পার্কিং লাইট জ্বেলে গাড়িটা স্টার্ট করার চেষ্টা করছিলাম। ঠিক সেই সময়ই স্কুটারে চেপে পেছনে এসে দাঁড়ায় তিন যুবক।
তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। কাচে ধাক্কা মেরে বারবার জিজ্ঞেস করছিল, কেন রাস্তার মাঝে আমি গাড়ি দাঁড় করিয়েছি। এরপরই জোর করে গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে চালককে টেনে বের করে আনা হয়। এক যাত্রী বিরক্ত হয়ে অভিযুক্তদের গালিগালাজ করতে থাকলেও তাতে কাজ হয়নি। অভিযুক্ত তিনজন চালকের ধর্ম তুলে কটূক্তি করতে থাকে। এমনকি তাকে জয় শ্রীরাম বলতে জোর করা হয়। বলা হয়, এই স্লোগান দিলে তবেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এরপর গাড়ির যাত্রী পুলিশকে ফোন করলে চালকের ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় তিনজন।
ফৈজল জানিয়েছেন, তার ফোন কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাকে মারধরও করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ’ বলে চিৎকার করাতেই মার খেতে হয়েছে। তবে বুদ্ধি করে ওই তিনজনের স্কুটারের নাম্বার লিখে রেখেছিলেন ফৈজল। সেই সূত্র ধরেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। থানে পুলিশ কমিশনার বিবেক ফানসালকর বলেন, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এখনও আতঙ্কে আছেন ফৈজল।