নিউজিল্যান্ডে নজিরবিহীন ধর্মঘটে ৫০ হাজার শিক্ষক
বেতন বৃদ্ধি ও কাজের সময় কমিয়ে আনাসহ বিভিন্ন দাবিতে দেশব্যাপী নজিরবিহীন ধর্মঘট পালন করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা৷ এই ধর্মঘটকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধর্মঘট বলা হচ্ছে। বাজেট প্রস্তাব পেশের আগের দিন বুধবার প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক এই ধর্মঘটে অংশ নেন। তবে এবারের বাজেটকে ‘কল্যাণকর বাজেট' হিসাবে প্রচার চালিয়ে আসছে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্দার্নের মধ্য-বামপন্থি সরকার৷
নিউজিল্যান্ডে সরকার ও শিক্ষক ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে দাবি আদায় নিয়ে এমন অচলাবস্থা দীর্ঘদিনের৷ শিক্ষকরা বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে এলেও সরকার এটাতে সায় দিতে রাজি নয়। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, বর্তমান হারেই চার বছরের মধ্যে শিক্ষকদের বেতনে ৭০৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাড়বে। খবর: ডয়েচে ভেলে।
আন্দোলনকারীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গত এক দশকে ক্রমাগত অর্থের ঘাটতির কারণে শিক্ষকরা কম বেতন পাচ্ছেন এবং তাঁদেরকে বেশি সময় কাজ করতে হচ্ছে। এ কারণে অতীতের যে-কোনো সময়ের তুলনায় বেশি সংখ্যায় চাকরি ছাড়ছেন শিক্ষকরা।
সামাজিক সেবাখাত এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড সরকার যে নানাবিধ সমস্যা মোকাবেলা করছে, শিক্ষকদের এই ধর্মঘট সেটিকে সামনে নিয়ে এসেছে। বেতন বৃদ্ধিতে ধীরগতির বিপরীতে ব্যয় বাড়ায় কষ্টের সম্মুখীন হওয়ার কথা বলছেন আন্দোলনকারীরা।
বাজেট ঘোষণার দু'দিন আগেই এর কিছু অংশ প্রকাশ করে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিরোধী দল। আর এভাবে বাজেট প্রকাশ হওয়াকে ‘প্রক্রিয়াগত ও ক্রমাগত' সাইবার অ্যাটাক হিসাবে অভিহিত করেছে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। দেশটির অর্থমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল ম্যাখলউফ বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টায় সরকারের সিস্টেমে দুই হাজার আক্রমণ করেছে হ্যাকাররা। এর মাধ্যমে তারা বাজেটের কিছু অংশ পেয়ে গেছে।
রেডিও নিউজিল্যান্ডকে তিনি বলেছেন, ‘কেউ একজন ভেতরে ঢুকে পড়তে সক্ষম হয়েছে এবং কিছু তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। তবে পুরো বাজেট নিতে পারেনি।’ এ ঘটনা তদন্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ৷
এদিকে কোনো ধরনের ‘বেআইনি কাজের’ সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে নিউজিল্যান্ডের বিরোধী দল ‘ন্যাশনাল পার্টি’। বিরোধী দলীয় নেতা সিমন ব্রিজস বলেছেন, ‘ন্যাশনাল পার্টি যা করছে, তা যথাযথভাবে করছে। আমরা কোনো কিছু বেআইনিভাবে করিনি। আমাদের হাতে যেসব তথ্য আছে, সেগুলো পেতে কোনো হ্যাকিংয়ের ঘটনাও ঘটেনি।’