১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:০৮

হাসিনার ফাঁসির রায় নিয়ে যা বলল ভারত

হাসিনার ফাঁসির রায় নিয়ে যা বলল ভারত  © সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থয়ের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। সোমবার এই রায়কে কেন্দ্র করে এক বিবৃতি দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের ব্যক্তিগত এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, শেখ হাসিনাকে দেওয়া আদালতের রায় ভারতের ‘নজরে’ রয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ভারত বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব অংশীদারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করে যাব। তবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত। একই সঙ্গে তাদের হস্তান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশের আহ্বানের কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি মোদির দেশ।

এর আগে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হত্যাকাণ্ডের দায়ে অপরাধী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেন। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারত থেকে তাকে দেশে ফেরাতে নানাভাবে চেষ্টা চালানো হয়। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায়ের পর পলাতক দণ্ডপ্রাপ্তদের আশ্রয় দিলে তা হবে অবন্ধুসুলভ আচরণ হবে না বলে স্পষ্ট বার্তা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোন দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।

বার্তায় বলা হয়েছে, আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন।  দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে।

এদিকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচারের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট, তবে বিস্মিত নন। গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারত সরকারের কাছে আবারও চিঠি দেওয়া হবে।

ড. আসিফ বলেন, ‘আমরা শেখ হাসিনাকে দেশে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আবারও চিঠি লিখব। ভারত যদি এই গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতকে বুঝতে হবে—এটি বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক এবং নিন্দনীয় আচরণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ একটি বিচার হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, আমরা যতদিন আছি বিচারকার্য পূর্ণ গতিতে চলবে।’