পশ্চিম তীর দখল সংক্রান্ত বিল স্থগিতের নির্দেশ নেতানিয়াহুর
ব্যাপক সমালোচনা ও যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর হুঁশিয়ারির পর ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের দুটি ভূখণ্ড—জুদেয়া ও সামারিয়াকে—ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবিত বিলের কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
লিকুদ পার্টির এমপি ওফির কাৎজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত জুদেয়া ও সামারিয়াকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত বিলটির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে।‘
১৯৬৭ সালের আরব–ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের এই দুটি অঞ্চল দখল করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত অঞ্চল দুটি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
গত বুধবার ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে জুদেয়া ও সামারিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলি ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিলটি উত্থাপন করা হয়। ১২০ আসনের নেসেটে বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ২৫টি, বিপক্ষে ২৪টি। বাকি ৭১ জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। ভোটদানে বিরত থাকা সদস্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তাঁর লিকুদ পার্টির কয়েকজন এমপিও ছিলেন।
বিলটি পাস হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তীব্র সমালোচনা আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক উপদেষ্টা মার্কো রুবিও বলেন, ‘তারা (ইসরায়েল) নেসেটে একটি বিল পাস করেছে, কিন্তু আমাদের পক্ষ থেকে এই বিলের কোনো সমর্থন দেওয়া হবে না। আমরা এটিকে গাজায় শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখি।’
এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সতর্ক করে বলেন, ‘যদি এই বিলের বাস্তবায়ন শুরু হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা হারাবে ইসরায়েল।‘
ইসরায়েলের পার্লামেন্টারি বিধি অনুযায়ী, কোনো বিল চূড়ান্তভাবে পাস হতে হলে মোট চার দফায় ভোট হয়। চতুর্থ দফার ভোটে নির্ধারিত হয় বিলটি কার্যকর হবে কি না।তবে নেতানিয়াহুর নির্দেশনার পর আপাতত ওই বিলের ওপর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে।