পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলা
পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে সীমান্তজুড়ে দুই দেশের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, আফগান বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়, এতে ভারী অস্ত্র, ট্যাংক ও আর্টিলারি ব্যবহৃত হয়েছে।
আফগান সরকারের অভিযোগ, গত সপ্তাহে পাকিস্তান আফগান রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায়। এরই জবাবে সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে বলে দাবি তালেবান সীমান্তবাহিনীর। আফগান বাহিনী খাইবার পাখতুনখোয়ার আঙ্গুরআড্ডা, বাজাউর, কুররাম, দির, চিত্রাল এবং বেলুচিস্তানের বারামচায় পাকিস্তানি পোস্টে হামলা চালায়।
জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আফগান বাহিনীর একাধিক সীমান্ত পোস্টে পাল্টা হামলা চালায়। ডন-এর নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানায়, এতে আফগান বাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ‘গুরুতর ক্ষতি’ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি জানিয়েছেন, আফগান বাহিনীর ‘উসকানিমূলক’ হামলার বিরুদ্ধে পাকিস্তান শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। আমাদের সাহসী সেনাবাহিনী দ্রুত ও কার্যকর জবাব দিয়েছে। কোনো উসকানি সহ্য করা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সেনারা সতর্ক অবস্থানে আছে। আফগানিস্তানকে ইটের জবাবে পাথর দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের জনগণ সেনাবাহিনীর পাশে আছে ইস্পাতের দেয়ালের মতো। আফগানিস্তানকেও ভারতের মতোই উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।’
এই সংঘর্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাধিক দেশ। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘দুই দেশকে সংযম প্রদর্শন করতে হবে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের স্থিতিশীলতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।’
সৌদি আরব এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘সংযম, উত্তেজনা পরিহার ও সংলাপের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যাতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখার আহবান জানিয়েছে।’
কাতারও একই আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমের মাধ্যমে দুই পক্ষ যেন উত্তেজনা কমায়। কাতার আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় আন্তর্জাতিক সব উদ্যোগকে সমর্থন করে এবং পাকিস্তান ও আফগান জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধির পক্ষে রয়েছে।‘
সংবাদসূত্র: ডন