০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৩৯

ত্রাণবাহী ফ্লোটিলা আটকের প্রতিবাদে ইসরায়েলি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর

ত্রাণবাহী ফ্লোটিলা আটকের প্রতিবাদে ইসরায়েলি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর  © সংগৃহীত

গাজাগামী মানবিক ত্রাণবাহী ফ্লোটিলা আটক করায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের ঢেউ। প্রতিবাদকারীরা বিশ্বের বিভিন্ন শহরে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি ইসরায়েলি মালিকানাধীন দোকানপাট, রেস্তোরাঁ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন।

বুধবার রাতে থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৪১টি নৌযানে থাকা ৪০০ জনেরও বেশি অধিকারকর্মীকে আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। তাদের দাবি, আটককৃত সবাই নিরাপদ ও সুস্থ রয়েছেন এবং অভিযানকালে কোনো সহিংসতা হয়নি। তবে এই ঘটনার পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফুঁসে ওঠে গণবিক্ষোভ।

বিশেষ করে ডাবলিন, প্যারিস, বার্লিন ও জেনেভায় হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা ফ্লোটিলা আটকের নিন্দা জানিয়ে ‘গাজা তুমি একা নও’, ‘ইসরায়েল বয়কট করো’, ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চাই’—এমন নানা স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলে।

দাবি উঠেছে, ইসরায়েল যে নৌ অবরোধের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে, তা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনবিরোধী।

বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে লাতিন আমেরিকাও। বুয়েনস আইরেস, মেক্সিকো সিটি এবং পাকিস্তানের করাচিতেও ব্যাপক প্রতিবাদ হয়। কোথাও কোথাও আন্দোলনকারীরা ইসরায়েলি স্বত্বাধিকারাধীন বা সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর হামলা চালান, ভাঙচুর করেন এবং ব্যবসা বর্জনের ডাক দেন।

ঘটনার কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়াও তীব্র হয়েছে। কলম্বিয়া সরকার দেশ থেকে ইসরায়েলের সব কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে এবং তাদের সঙ্গে চলমান একটি বাণিজ্য চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। তুরস্কের সরকার এই ঘটনাকে “সরাসরি সন্ত্রাসী তৎপরতা” বলে নিন্দা জানিয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অবশ্য নৌবাহিনীর এই অভিযানকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “আমাদের নৌবাহিনী সফলভাবে অবরোধ ভাঙার প্রচেষ্টা প্রতিহত করেছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর একটি পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে।”

উল্লেখ্য, গত মাসে স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। ফ্লোটিলায় ছিলেন বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, চিকিৎসক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকসহ প্রায় ৫০০ জন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েলি অবরোধ অমান্য করে সরাসরি গাজার উপকূলে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে হামাস একে “বেসামরিকদের বিরুদ্ধে জলদস্যুতা ও সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদ” বলে উল্লেখ করেছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেছে।

এদিকে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বিরলভাবে ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীদের সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের আন্দোলন ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কোনো বাস্তব উপকার বয়ে আনে না।’