জন্মদিনে মোদিকে ‘বন্ধু’ ট্রাম্পের ফোন, কী কথা হলো
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে মোদিকে তার ৭৫তম জন্মদিনের আগের দিন এই শুভেচ্ছা জানান ট্রাম্প।
এদিনের ফোনালাপের আগে একই দিনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পর্যায়ের বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এটি দুই পক্ষই ‘ইতিবাচক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। গত মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের তেল কেনার কারণে ট্রাম্পের ক্ষুব্ধ হয়ে শুল্ক ৫০ শতাংশ বাড়ানোয় দুই দেশের সম্পর্ক শীতল হয়ে যায়। এ পরিস্থিতির পর এটি দুই নেতার মধ্যে প্রথম ফোনালাপ।
ফোনালাপের পাশাপাশি মোদি ও ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে তাদের অবস্থান প্রকাশ করেছেন। মোদি বলেছেন, তিনি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্বকে ‘নতুন উচ্চতায়’ উন্নীত করতে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নিজস্ব মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘এইমাত্র আমার বন্ধু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক অসাধারণ ফোনালাপ করলাম। আমি তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম! তিনি দারুণ কাজ করছেন। নরেন্দ্র: রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টায় আপনার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।’
মোদি এক্সে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, ‘আমার ৭৫তম জন্মদিনে ফোনকল ও আন্তরিক শুভেচ্ছার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, আমার বন্ধু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আপনার মতো আমিও ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বিত ও বৈশ্বিক অংশীদারত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ফোনালাপে ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাম্প্রতিক বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, ‘ইউক্রেন সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানে আপনার উদ্যোগগুলোও আমরা সমর্থন করি’। সম্প্রতি আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে এবং ওয়াশিংটনে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ১৭ জুনের পর এটি মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে প্রথম ফোনালাপ। ১৭ জুনের আলাপে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি করিয়েছেন এবং এ তৎপরতার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার সম্পর্ক রয়েছে। মোদি তখন এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, কোনো স্তরেই ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি আলোচনা হয়নি এবং ভারত-পাকিস্তানের মধ্যস্থতার প্রস্তাবও আলোচনায় আসে নি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ওই সময় ফোনালাপের তথ্য জানিয়েছেন।
৬ সেপ্টেম্বর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ট্রাম্প বলেছিলেন, দুই দেশের মধ্যে একটি ‘বিশেষ সম্পর্ক’ রয়েছে এবং ‘দুশ্চিন্তার কিছু নেই’। কয়েক ঘণ্টা পর মোদি ট্রাম্পের সদিচ্ছা ও ইতিবাচক মূল্যায়নের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ১০ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প বাণিজ্য উত্তেজনা কমার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন এবং বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আলোচনা চালাচ্ছে, যা ‘কোনো সমস্যা ছাড়াই’ সফল হবে। মোদি জবাবে বলেন, দুই দেশ পরস্পরের ‘সহযোগী’ এবং আরও উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করবে।