যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করতে যে কৌশল নিচ্ছে ভারত
যুক্তরাষ্ট্রের কড়া শুল্কের ধাক্কা সামলাতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। শত শত পণ্যের ওপর কর কমিয়ে ভোগ বাড়ানো এবং অর্থনীতিকে চাঙা করার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) কাঠামো সরলীকরণ করে চারটি স্তর থেকে কমিয়ে দুই স্তরে আনা হয়েছে—৫ শতাংশ ও ১৮ শতাংশ। ক্ষতিকর পণ্য যেমন সিগারেটের ওপর থাকবে আলাদা ৪০ শতাংশ কর।
নতুন করহার কার্যকর হবে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে। এ সময় ভারতের উৎসব মৌসুম শুরু হয়, যখন এসি, টিভি, ফ্রিজের মতো ইলেকট্রনিক পণ্যের বিক্রি বাড়ে। দাম কমায় এসব পণ্যের বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে । কর ছাড়ের ফলে খাদ্যপণ্য, স্কুলের সরঞ্জাম ও বিমা সস্তা হবে। তবে আমদানি করা মদ ও বিলাসবহুল গাড়ির দাম বাড়বে।
ঘোষণার পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিলেও বিশ্লেষকদের মতে, এ উদ্যোগে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যেতে পারে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। তবে অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, ভোগ বাড়লে রাজস্ব ঘাটতি অনেকটাই সামলে নেওয়া সম্ভব।
কোটাক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রীপাল শাহ বলেন, "কর ছাড় সরাসরি ভোগ বাড়াবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিক্রি বাড়বে এবং করপোরেট আয়ও ইতিবাচক প্রভাব পেতে পারে। এতে মুদ্রাস্ফীতিও কমতে পারে।"
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য "বৃহৎ কর সুবিধা" দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নতুন জিএসটি হার কমানোকে সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হিসেবে দেখা হচ্ছে। মোদি জানান, এ সংস্কার কৃষক, মধ্যবিত্ত, নারী ও যুবকদের উপকার করবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা সহজ করবে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, করছাড় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় ভারতের জন্য এক ধরনের সুরক্ষা হিসেবেও কাজ করবে।
সংবাদসূত্র: বিবিসি