গোপন তথ্য ফাঁস করে যুক্তরাষ্ট্রের আসল রুপ দেখিয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ
উইকিলিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান আসঞ্জকে গ্রেফতারের পর তাকে লন্ডনের এক থানায় আটকে রাখা হয়েছে। এরপর তাকে যত দ্রুত সম্ভব ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। জুলিয়ান আসঞ্জ ২০০৬ সালে ক’জন সাথীকে নিয়ে চালু করেন উইকিলিকস নামের ওয়েবসাইট।
এই সাইটে তিনি একের পর এক গোপন মার্কিন দলিলপত্র প্রকাশ করতে থাকেন। এই কারণে বিব্রত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর খুবই ক্রুদ্ধ হয়। আফগান ও ইরাকযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন কর্মকাণ্ডের শত শত দলিল বিশ্বব্যাপী ফাঁস করার মধ্য দিয়ে অ্যাসাঞ্জ ও উইকিলিকস সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে ন্যাটো জোটের অপকর্ম ফাঁস করে দিয়েছিলেন। এর মূল্যও আজ তাকে দিতে হল।
উইকিলিক্সের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠে ২০১০ সালে যখন একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখানো হয় যে মার্কিন সৈন্যরা ইরাকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে ১৮ জন বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে। পরের বছর যৌন হয়রানির অভিযোগে সুইডেন সরকার তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তাকে লন্ডনে আটক করা হয়।
কিন্তু যৌন হয়রানির মামলাগুলো পরে প্রত্যাহার করা হয়। ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট ২০১২ সালে আসাঞ্জকে সুইডেনের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলে তিনি একুয়েডরের দূতাবাসে ঢুকে রাজনৈতিক আশ্রয় চান এবং তিনি সেটা পেয়েও যান। খবর: বিবিসি অবলম্বনে।
তারপর থেকে এই সাত বছর ধরে তিনি দূতাবাসের মধ্যেই বসবাস করছিলেন। জুলিয়ান আসঞ্জের ভক্তরা তাকে একজন সত্যানুসন্ধানী বলে মনে করলেও তার সমালোচকরা বলেন, তিনি একজন প্রচারকামী। যারা তার সাথে কাজ করেছেন তারা বলেন, তিনি আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং প্রখর বুদ্ধিমত্তার অধিকারী লোক, যার কম্পিউটারের সাংকেতিক বার্তা ভেদ করার চমকপ্রদ ক্ষমতা আছে।
জানা যায় যে, তিনি অনেকদিন না খেয়ে থাকতে পারেন এবং খুবই কম ঘুমিয়েও কাজে মনঃসংযোগ করতে পারেন। তার জন্ম ১৯৭১ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সভিলে। তার পিতামাতা একটি ভ্রাম্যমাণ থিয়েটার দল চালাতেন এবং সে কারণে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে তার শৈশব কেটেছে।
আঠারো বছর বয়েসেই আসঞ্জ সন্তানের পিতা হন। ইন্টারনেটের যুগে কম্পিউটার হ্যাকিং তার নেশা হয়ে দাঁড়ায়, তাতে ধরা পড়লেও শেষ পর্যন্ত তাকে কারাভোগ করতে হয়নি। পরে তিনি মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা এবং গণিত পড়েন, এবং তার গাণিতিক প্রতিভা অনেকের নজর কাড়ে।