ইরানের নতুন পারমাণবিক স্থাপনার তথ্য অজানা, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলও জানে না!
ইরানের নতুন পারমাণবিক স্থাপনার তথ্য অজানা, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলও জানে না!ইরান একটি নতুন পারমাণবিক স্থাপনা নির্মাণ করেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাকে (IAEA)। গত ১২ জুন সংস্থাটিকে এ তথ্য জানায় তেহরান। তবে এই স্থাপনাটি কোথায়—তা প্রকাশ করা হয়নি। ফলে পশ্চিমা বিশ্বেও এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্র বিশ্লেষক অ্যালেক্স বলফ্রাস বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না এটি কোথায় অবস্থিত। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের কাছেও এই তথ্য নাও থাকতে পারে। ইরান এই স্থাপনাতেই তাদের ইউরেনিয়াম মজুদ সরিয়ে ফেলতে পারে বলে ধারণা।’
হামলার পরের তিন দিনের মধ্যে পেন্টাগনের এক মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদ ধ্বংস হয়নি এবং অধিকাংশ সেন্ট্রিফিউজ অক্ষত রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি মূলত হয়েছে স্থলভাগে, ভূগর্ভস্থ প্রধান স্থাপনাগুলো প্রায় অক্ষত।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, এই হামলা ইরানকে মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিতে পেরেছে। তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই মূল্যায়নকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় সিআইএ প্রধান বলেন, ইরানের সেন্ট্রিফিউজগুলোতে ‘ব্যাপক ক্ষতি’ হয়েছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা পারমাণবিক কর্মসূচিকে থামিয়ে দেবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ইরানের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তাদের দাবি, পারমাণবিক সক্ষমতাই ভবিষ্যতের হামলা থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারে।
ইরানের পার্লামেন্ট ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের প্রস্তাব পাস করেছে। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেননি কোনো সদস্য।
জাতিসংঘের আণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি বলেছেন, তার সংস্থা ইরানে ফিরে কাজ করতে চায়। তবে তিনি স্বীকার করেন, এটি সহজ হবে না। গ্রসি বলেন, ‘এটা দুই বা তিন মাসের দেরির বিষয় নয়, দরকার কূটনৈতিক সমাধান। প্রযুক্তি ও সক্ষমতা সেখানে এখনো আছে—এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।’
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ইরান এখন আরও দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগোতে চাইতে পারে। কারণ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার আওতাভুক্ত থেকেও তারা নিজস্ব স্থাপনাগুলোকে হামলা থেকে রক্ষা করতে পারেনি।