‘ইরান অপরাজেয় জাতি, হারানো অসম্ভব’— যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলকে হিজবুল্লাহ প্রধানের কড়া বার্তা
লেবাননের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ নাইম কাসেম বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের চাপ সৃষ্টির চেষ্টা ‘ভিত্তিহীন অজুহাত’ মাত্র। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ইরান তার শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার পূর্ণ অধিকার রাখে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে কাসেম ইরানের প্রতি হিজবুল্লাহর নিঃশর্ত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বিশ্বের সকল স্বাধীনতাকামী জাতিকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে, যা ইরানি জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নে সহায়ক। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এসব চাপ অযৌক্তিক এবং ব্যর্থ প্রয়াস।’ তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইন এবং নিউক্লিয়ার নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি (NPT) অনুযায়ী ইরানের এ কর্মসূচির বৈধতা রয়েছে।
কাসেমের দাবি, ইরান এখন বিশ্বের নিপীড়িতদের পক্ষের প্রতিরোধের প্রতীক, বিশেষ করে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম (কুদস) মুক্তির সংগ্রামে। গত ৪৬ বছরে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও আগ্রাসনের মধ্যেও ইরানের স্থিতিশীল অবস্থান প্রমাণ করে দেয় তার অভ্যন্তরীণ শক্তি এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নেতৃত্বের দৃঢ়তা।
তিনি খামেনিকে কটাক্ষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও তীব্র সমালোচনা করেন। কাসেম বলেন, ‘এ ধরনের আক্রমণ শুধু ইরানের নয়, বরং সমগ্র অঞ্চল ও বিশ্বের স্বাধীনতাকামী জনগণের ওপর আঘাত।’
সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এসব তৎপরতা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে এবং শেষ পর্যন্ত তা তাদের জন্যই ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।’
হিজবুল্লাহর এই নেতা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ইরানের স্বাধীনতা ও ন্যায়সংগত অধিকারের প্রশ্নে তাদের অবস্থান কখনো নিরপেক্ষ হবে না। ‘আমরা সবসময় ইরানের পাশে থাকব,’—এই বার্তা দিয়ে তিনি সকল স্বাধীনতাকামী জাতিকে আহ্বান জানান যেন তারা ‘অহংকারী শক্তির ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়।’
বক্তব্যের শেষ অংশে কাসেম দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল কখনোই ইরানি জনগণ বা এর প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পরাজিত করতে পারবে না। অতীত অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে—এই জাতিকে পরাস্ত করা সম্ভব নয়। সমস্ত চাপের মুখেও ইরানের প্রতিরোধ চলতে থাকবে।’
এই বক্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আবারও বেড়েছে এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ইরানি কর্মকর্তারা বারবার জানিয়েছেন—তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ এবং তারা কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের পথে হাঁটতে চান না।