১২ জুন ২০২৫, ২৩:২৪

দশ মিনিট দেরিই বাঁচিয়ে দিল ভূমির জীবন

প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

মাত্র ১০ মিনিট দেরির জোরে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা পেলেন এক ভারতীয় নারী। অহমদাবাদ বিমানবন্দরে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা দেরিতে পৌঁছেছিলেন ভূমি চৌহান। আর সেই সামান্য দেরিতেই যেন জীবনটা ফিরে পেলেন তিনি।

ভূমি চৌহান এক অনাবাসী ভারতীয়, থাকেন ব্রিটেনের ব্রিস্টলে। তাঁর স্বামীও সেখানে বসবাস করেন। ছুটি কাটাতে সম্প্রতি ভারতে এসেছিলেন ভূমি। গত বৃহস্পতিবার ব্রিটেনে ফেরার জন্য অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে একটি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ধরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু রওনা হওয়ার সময় শহরের তীব্র যানজটে পড়ায় তিনি ১০ মিনিট দেরিতে বিমানবন্দরে পৌঁছান এবং বিমানে উঠতে পারেননি।

এই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকেই ভেঙে পড়েছেন ভূমি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “আমার পুরো শরীর এখনও কাঁপছে! আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। ঈশ্বরই আমাকে বাঁচিয়েছেন।”

বিমানবন্দর থেকে ফেরার পর তিনি গুজরাতের নিজ বাড়িতে ফিরে যান। দুপুর দেড়টা নাগাদ বিমানবন্দর ত্যাগ করেন ভূমি। পরে যখন দুর্ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে, তখন রাস্তায় অসংখ্য পুলিশের গাড়ি চলাচল করতে দেখেন তিনি। তবে বিমানবন্দরের পরিস্থিতি আর দেখতে পাননি।

কী ঘটেছিল সেই দুপুরে?
বৃহস্পতিবার দুপুরে অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ব্রিটেনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেছিল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই, স্থানীয় সময় ১টা ৩৮ মিনিটে, বিমানটি গুজরাতের মেঘানিনগর এলাকায় একটি ছাত্রাবাসের উপর ভেঙে পড়ে। জানা গেছে, মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছেই দুর্ঘটনার শিকার হয় বিমানটি।

বিমানটিতে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন—এর মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি জানায়, এই দুর্ঘটনায় সকলেরই মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। রয়টার্স সূত্রে জানা গেছে, শতাধিক মরদেহ ইতিমধ্যে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কান্না, ভিড় আর উৎকণ্ঠা
দুর্ঘটনার খবর শোনার পরপরই অহমদাবাদের বিভিন্ন হাসপাতালের বাইরে ভিড় করতে থাকেন নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরা। অনেকে কাঁদছেন, কেউবা আকুল হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রিয়জনের খোঁজ চাইছেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধারকাজ চালাতে দ্রুত মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় সেনার ১৩০ জন সদস্যকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছে ‘কুইক অ্যাকশন টিম’ (QAT), চিকিৎসক, এবং সেনা হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনা হাসপাতালও।

ভূমি চৌহানের সেই ১০ মিনিটের দেরি এক নির্মম ট্র্যাজেডির সাক্ষী হওয়া থেকে বাঁচিয়ে দিল তাঁকে। তাঁর চোখে এখন শুধু কৃতজ্ঞতা—জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য।