গাজা খালি করার পরিকল্পনা ট্রাম্পের, জাতিগত নিধনের আশঙ্কা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩০ PM , আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩০ PM

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাকে খালি করতে আগ্রহী।। একইসাথে তিনি জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন, যাতে দেশটি গাজার ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেয়। গতকাল শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের এই কথা বলেছেন। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তবে ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবের কারণে গাজায় জাতিগত নিধনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।
ট্রাম্প বলেন, আমি মিশরকে আহ্বান করছি গাজা থেকে লোকজনকে আশ্রয় দেবেন। আপনারা সম্ভবত ১৫ লাখ মানুষের কথা বলছেন। আমরা কেবল পুরো জিনিসটাকে পরিষ্কার করে বলি। আপনারা জানেন, এখানে সব শেষ।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সফলভাবে গ্রহণ করার জন্য জর্ডানের প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। তিনি জর্ডানের রাজাকে বলেন, আমি চাই আপনারা আরও বেশি ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেবেন। কারণ আমি এখন পুরো গাজা উপত্যকার দিকে তাকিয়ে আছি, সেখানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণে গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। দখলদার বাহিনীর হামলার কারণে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিয়ত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। ট্রাম্প বলেছেন, গাজার বাসিন্দাদের সাময়িকভাবে বা দীর্ঘমেয়াদে স্থানান্তর করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, এটি এখন আক্ষরিক অর্থে একটি ধ্বংসস্তুপ। প্রায় সবকিছুই ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং সেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে। সুতরাং আমি কিছু আরব দেশের সাথে যুক্ত হতে চাই এবং একটি ভিন্ন জায়গায় আবাসন তৈরি করতে চাই যেখানে ফিলিস্তিনিরা শান্তিতে থাকতে থাকতে পারবে।
তবে কাতারের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল-আরিয়ান আল জাজিরাকে বলেছেন যে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যুদ্ধের শুরুতেই যতটা সম্ভব দ্রুত সময়ে ‘জাতিগত নিধনের’ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু নানা কারণে তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।
তাছাড়া ফিলিস্তিনিরা নিজেরাও ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবে আগ্রহী হবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ এসব ফিলিস্তিনিরা ভালো করেই জানেন যে, তাদের ভূমি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার মানে কি হবে। এই ভূমির অধিকার রক্ষার জন্য গত ৭০ বছর ধরে ফিলিস্তিনি নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং তরুণরা জীবন দিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে সবকিছু ছেড়ে তারা অন্যত্র আশ্রয় নেবেন না।
এদিকে উগ্র ডানপন্থী ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ গাজার বাসিন্দাদের মিশর ও জর্ডানে স্থানান্তরের বিষয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ভালোভাবে জীবন শুরু করার জন্য অন্য জায়গা খুঁজে পেতে তাদের সাহায্য করার পরিকল্পনাটি দুর্দান্ত। অন্য জায়গায় তারা নতুন ভাবে উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে।