দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের অভিশংসন প্রস্তাব সংসদে
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তার নিজ দলেরই শীর্ষ নেতারা। সামরিক আইন জারির ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর ইওলকে রাষ্ট্রের শীর্ষ পদ থেকে সরানোর ব্যাপারে একজোট হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। এমনকি প্রেসিডেন্টের অভিশংসন প্রস্তাব ভোটাভুটির জন্য উঠতে যাচ্ছে সংসদে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মার্শাল ল বা সামরিক আইন জারি করে তীব্র সমালোচনার মুখে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে ইউন বলেন, ‘দেশে সামরিক আইন ঘোষণার জন্য আমি খুবই দুঃখিত এবং আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’
ধারণা করা হচ্ছিল এই ভাষণে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দিবেন। কিন্তু তা না করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার দায়িত্ব ক্ষমতাসীন দলকে অর্পণ করবেন। অভিশংসন বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
সিউল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শুক্রবার সবাইকে সতর্ক করে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হান ডং-হুন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ইওল দেশের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এখনো ‘ভয়ংকর ঝুঁকি’ আছে কারণ, প্রেসিডেন্ট আবারও বেসামরিক শাসনকে ধ্বংস করতে পারেন।
ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টি প্রধান ডং-হুন আরও বলেছেন, শনিবার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাবে প্রয়োজনীয়সংখ্যক আইনপ্রণেতা সমর্থন দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।
তবে গত বৃহস্পতিবার হান যে কথা বলেছিলেন, তা থেকে সরে এসে এখন পুরোপুরি উল্টো কথা বলছেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাবে আমরা তার পক্ষে অবস্থান নেব। এ ছাড়া আরও একজন নেতা বলেছিলেন, শনিবারের ভোটাভুটিতে ইওলের পক্ষ নিতে ১০৮ জন সদস্য প্রস্তুত আছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ ডিসেম্বর রাতে প্রেসিডেন্ট ইওল জাতির উদ্দেশে ভাষণকালে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন। কিন্তু তার এই ঘোষণার পরপরই প্রধান বিরোধী দলসহ সাধারণ জনগণ পার্লামেন্ট ভবন ঘেরাও করে রাখে।
বিরোধী ডেমোক্রেটিক লিবারেল পার্টি সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তারা প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করলে স্পিকার ভোটাভুটির আয়োজন করেন এবং প্রেসিডেন্টের এই প্রচেষ্টাকে অবৈধ ঘোষণা করনে। পরে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে মাত্র ৬ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রেসিডেন্ট সামরিক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।