২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জরুরি নির্দেশনা দিল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরতে বলছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো   © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের আগেই বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মীদেরকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সম্প্রতি ই-মেইল বার্তার মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প জয়লাভের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের মধ্যে দিন দিন উদ্বেগ বাড়ছে। এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হঠাৎ এমন সতর্কবার্তায় অনেকে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গেছেন। এই অভিযানের ফলে যারা বেকায়দায় পড়তে পারেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো ডেনভারের অধ্যাপক ক্লোই ইস্ট বলেন, 'বিদেশি সব শিক্ষার্থীরা এখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। রিপাবলিকান পার্টির নেতা মি. ট্রাম্প এবার ক্ষমতায় বসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অভিযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ কাজে সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনে মার্কিন সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।' 

ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের আর্লহাম কলেজে অধ্যয়নরত জাপানি নাগরিক অই মায়েদা বলেন, '২০২৬ সালের মে মাসে আমার স্নাতক পাস করার কথা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে যে, আমাদের জন্য মার্কিন প্রশাসন একটু বেশিই বিপজ্জনক হতে চলেছে। পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে সামনে ভালো কিছু হওয়ার বিষয়ে আমি খুব একটা আশাবাদী না।'

তিনি আরও বলেন, 'ট্রাম্প বলেছেন যে, তিনি শুধু অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চান, কিন্তু বেশ কয়েকবার তাকে এর বাইরেও ব্যবস্থা নেয়ার প্রচেষ্টা চালাতে দেখা গেছে। কাজেই আমি মনে করি, তার এই সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসায় প্রভাব পড়তে পারে, যার ফলে তাদেরকে নিজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়াও বেশ সহজ হয়ে যাবে।'

উল্লেখ্য, প্রথম দফায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে বেশ কিছু কঠোর নিয়ম চালু করার প্রস্তাব করেছিলেন রিপাবলিকান এই নেতা। কঠোর অভিবাসন নীতির মাধ্যমে ট্রাম্প মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে চালু হওয়া একটি কর্মসূচির ইতি টানতে চাচ্ছেন, যে কর্মসূচিটি শিশু হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রায় ৫ লাখ মানুষকে এতদিন সুরক্ষা দিয়ে আসছিলো। এছাড়া, বেশ কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশ ছাড়াও উত্তর কোরিয়া ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

এছাড়া ভারত, পাকিস্তানসহ অনেক দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে, বিশেষত প্রযুক্তি খাতে কাজ করেন এবং তারা ‘এইচ-১বি’ ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও ‘এইচ-১বি’ ভিসা সংক্রান্ত নিয়মের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন এবং তখন এর বেশ প্রভাবও বিভিন্ন খাতে পড়তে দেখা গিয়েছিল।

এখন দ্বিতীয় মেয়াদেও একই নীতি অব্যাহত রাখতে চান ট্রাম্প, যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাবে।