আমেরিকায় ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ইলন মাস্কের গোপন সাক্ষাৎ

ইলন মাস্ক
ইলন মাস্ক  © সংগৃহীত

তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গোপনীয়তা বজায় রেখে সাক্ষাৎ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগী ইলন মাস্ক। 

দু’জন ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, গত সোমবার ওয়াশিংটনে ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে দেখা হয়েছে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাবনির। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।

দ্য নিউইয়র্ক টাইমস আরও বলেছে, গত সোমবার একটি গোপন স্থানে আমির সাঈদ ও ইলন মাস্কের মধ্যে এক ঘণ্টার বেশি ওই বৈঠক চলে।

এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী দল বা জাতিসংঘে ইরানের মিশন তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করেনি। আর ইরানের মিশন বলেছে, এ নিয়ে তাদের বলার কিছু নেই।

ইরানের যে কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা জানিয়েছেন, অ্যামেরিকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের আলোচনা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মাস্ক যেহেতু সরকারি প্রতিনিধি নন, তা-ই এই আলোচনায় কোনো সমস্যা হয়নি। কার্যত তৃতীয় চ্যানেলে এই বৈঠক সম্ভব হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করছিলেন। ট্রাম্পের প্রচারেও গেছেন তিনি। বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করেছেন। ফলে ট্রাম্প জেতার পর ক্ষমতার অলিন্দে মাস্কের গুরুত্ব আরো বাড়বে বলেই মনে করা হয়েছিল। তবে যেভাবে ইরানের সঙ্গে মধ্যস্থতায় নামলেন তিনি, তা অভূতপূর্ব।

ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মাস্কের বৈঠকের এ খবর যদি নিশ্চিত হয়ে থাকে, তবে ট্রাম্প যে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে কূটনৈতিক তৎপরতায় জোর দিচ্ছেন ও তেহরানের ব্যাপারে আরও আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি পছন্দ করছেন না, এটি তারই আগাম ইঙ্গিত। অথচ ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির অনেক রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ ও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল ইরানের বিষয়ে আক্রমণাত্মক মার্কিন নীতিকেই পছন্দ করেন।

প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ট্রাম্প ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক একটি চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তাঁর পূর্বসূরি বারাক ওবামার শাসনামলে ওই চুক্তি সই হয়েছিল। চুক্তি থেকে নিজ দেশকে বের করে আনা ছাড়াও ট্রাম্প ইরানকে ‘সর্বোচ্চ চাপে’ রাখার নীতি অনুসরণ করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল, ইরানের কাছ থেকে অন্য দেশগুলো যাতে তেল না কেনে, সে বিষয়ে চাপ তৈরির বিষয়টিও।

বিশ্লেষকদের মতে, বৈঠকের খবর নিশ্চিত হলে তা ট্রাম্প প্রশাসনে টেসলা ও এক্সের মালিক মাস্কের অসাধারণ প্রভাব থাকার বিষয়টিও ফুটিয়ে তুলবে।

গত মঙ্গলবার সরকারি দক্ষতা (ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি) নামে নতুন এক বিভাগের প্রধান হিসেবে ধনকুবের ইলন মাস্ককে নিয়োগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

 


সর্বশেষ সংবাদ