০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪

যুক্তরাষ্ট্রে ভোট শুরু কখন, চূড়ান্ত ফল মেলে কখন

ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা  © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই নির্বাচনেই ঠিক হতে যাচ্ছে কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, কার হাতে উঠবে বিশ্বব্যবস্থা। জনমত জরিপ অনুযায়ী, দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে এবার।

মূলত ‘সুইং স্টেট’ বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করবে কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় হবে। ইতোমধ্যেই ৮ কোটি ১০ লাখেরও বেশি আগাম ভোট দেওয়া হয়ে গেছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। তবে ভোট গ্রহণ শুরুর সময়কাল প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই ভিন্ন ভিন্ন। আর এরপরই মিলবে চূড়ান্ত ফল।

ভোটাররা কখন ভোট দেবেন
ভয়েস অব আমেরিকা এক প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশটির প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে ভোটদানের এই সময়কাল ভিন্ন। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে নির্বাচনের দিন সশরীরে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছিল ৩ নভেম্বর। আর এ বছরের ক্ষেত্রে দিনটি ৫ নভেম্বর।

সশরীরে ভোটদানের সুযোগের পাশাপাশি বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যে ডাকযোগেও ভোটের ব্যবস্থা থাকে। এই পদ্ধতিতে ভোটাররা মূলত চিঠির মাধ্যমে পূরণ করা ব্যালট পেপার পাঠাতে পারেন অথবা কোনো সুনির্দিষ্ট ড্রপ-অফ স্থানে তা জমা দিয়ে যেতে পারেন।

বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোটেরও ব্যবস্থা থাকে। আগাম ভোটদানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে বা ডাকযোগে এরই মধ্যে ৮১ মিলিয়নেরও বেশি বা ৮ কোটি ১০ লাখেরও বেশি আমেরিকান ভোট দিয়েছেন।

ফলাফল জানা যাবে কখন
নির্বাচনের দিন অর্থাৎ ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় সশরীরে ভোট দেওয়ার পালা শেষ হবে। সাধারণত যেসব অঙ্গরাজ্যের ভোট দ্রুত গণনা হয়, সেসব স্টেটের ফল রাতেই পাওয়া যেতে পারে।

প্রতিটি অঙ্গরাজ্য নিজেদের নিয়ম অনুযায়ী, ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর শুরু হয় ভোট গণনা। তবে সাধারণত অঙ্গরাজ্যভেদে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোট গণনা শুরু হতে পারে। মূলত সময়ের ব্যবধানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ভোট গণনার সময়ে পার্থক্য দেখা যায়।

ভয়েস অব আমেরিকা আরও বলছে, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার নিজ নিজ আইন অনুযায়ী ভোট দেওয়ার সময়সীমা ঘোষণা করা আছে। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ব্যালট গণনা ও কখন চিঠির মাধ্যমে আসা ভোট গ্রহণ করা যাবে, সে সংক্রান্ত আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। এ কারণে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের চূড়ান্ত ফলাফল নির্বাচনের পরের দিন বা তারও পরে জানা যাবে।

২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে বেশ কয়েক দিন লেগে গিয়েছিল। এবারও এমন হতে পারে যে নতুন প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে বিজয়ীদের নাম জানতে ৫ নভেম্বরের বেশ কয়েক দিন পর পর্যন্ত অপেক্ষার প্রয়োজন দেখা দেবে।

সুইং স্টেটগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের এবারের ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল কখন জানা যাবে তা নির্ভর করছে দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কতটা তীব্র হয় তার ওপর। আর এটা নির্ভর করবে ‘সুইং স্টেট’ অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটের ফলাফলের ওপরই।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্য বছরের পর বছর একই দলকে ভোট দিয়ে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯২ সাল থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাটরা জিতে এসেছে। ১৯৮০ সাল থেকে মিসিসিপি জিতেছে রিপাবলিকানরা।

অন্যদিকে সুইং স্টেটগুলো কখনও ডেমোক্র্যাট, কখনও রিপাবলিকান প্রার্থীদের নির্বাচিত করে। এই রাজ্যগুলোতে প্রার্থীরা ভোটের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালান, কারণ এই রাজ্যগুলোই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করতে ভূমিকা রাখে।

মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই বছরের মূল নির্বাচনী লড়াই হবে অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, উইসকনসিন এবং মিশিগানে।