স্পেনে আকস্মিক বন্যায় দেড়শরও বেশি নিহত
স্পেনে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ১৫৮ জনে। বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তাদের সন্ধানে উদ্ধারকর্মীরা বিধ্বস্ত গাড়ি ও ভবনগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত এই বন্যা স্পেনের শতাব্দীর সবচেয়ে মারাত্মক প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। খবর এপির।
প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে অন্তত ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভয়ঙ্কর জলোচ্ছ্বাসে এলাকাজুড়ে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, গাড়িগুলো পরস্পরের ওপর ভেঙে পড়েছে, গাছপালা উপড়ে গেছে, বিদ্যুতের লাইন ভেঙে গেছে এবং মাটিতে আটকে পড়েছে ঘরের বিভিন্ন সামগ্রী।
বন্যার ভয়াবহতা দক্ষিণ ও পূর্ব উপকূলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কাস্তিয়া লা মানচা অঞ্চলে দুইজন এবং আন্দালুসিয়ার দক্ষিণে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। আন্দালুসিয়ায় মঙ্গলবার রাতে একটি দ্রুতগামী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে ৩০০ যাত্রীর কেউই আহত হননি।
এই দুর্যোগ মোকাবিলায় স্পেনের সহস্রাধিক সেনা সদস্য, আঞ্চলিক ও স্থানীয় জরুরি পরিষেবা কর্মীদের সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন। বুধবার পর্যন্ত ২২টি মৃতদেহ উদ্ধার এবং ১১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
বন্যার কারণে বুধবার প্রায় দেড় লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন ছিল। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এর প্রায় অর্ধেক অংশে বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হলো মৃতদেহ এবং নিখোঁজদের সন্ধান করা। যাতে তাদের পরিবারের দুঃখ লাঘব করা যায়।
বৃহস্পতিবার তিনি ভ্যালেন্সিয়ায় জরুরি পরিষেবা এবং আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ করেছেন। স্পেনের এই ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে শরতের ঝড়-বন্যা পরিচিত হলেও, এবারকার আকস্মিক বন্যা স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হিসেবে চিহ্নিত।
বিজ্ঞানীরা এই ভয়াবহ ঘটনার কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে এটিকে সম্পৃক্ত করছেন। স্পেনে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও খরার পাশাপাশি ভূমধ্যসাগরের পানির উচ্চ তাপমাত্রাও এই দুর্যোগের পেছনে একটি কারণ বলে উল্লেখ করেছেন তারা।