২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪০

তসলিমা নাসরিনের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত

তসলিমা নাসরিন  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এএনআই।

আগের দিন সোমবার সামাজিক যোগাযোগামাধ্য ও মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন তসলিমা। সে বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘প্রিয় অমিত শাহ জী নমস্কার। আমি ভারতে বসবাস করছি কারণ আমি এই মহান দেশকে ভালোবাসি। ২০ বছর ধরে এই দেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি; কিন্তু গত ২২ জুলাইয়ের পর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমার রেসিডেন্স ভিসার মেয়াদ আর বাড়ায়নি। আমি খুবই উদ্বেগ বোধ করছি। আপনি যদি আমাকে এই দেশে থাকতে দেন, আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ থাকব।’

এক্সে তসলিমার এই পোস্টের পর ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় এবং এ ব্যাপারে তাকে অবহিত কারার পর মঙ্গলবার এক এক্সবার্তায় অমিত শাহ ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পোস্ট করেছেন তসলিমা নাসরিন। সেই পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘অসংখ্য, অজস্র ধন্যবাদ।’

আরও পড়ুন: দেশ আগেও স্বাধীন ছিল না, এখনও নয়: তসলিমা নাসরিন

এর আগে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমকে তসলিমা নাসরিন বলেছিলেন, তার রেসিডেন্স ভিসার মেয়াদ গত ২২ জুলাই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে এবং এর পর থেকে আর মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। তিনি আরও বলেছিলেন, ভিসার মেয়াদ বা রেসিডেন্সি পারমিট না বাড়ানো হলে খুবই বিপদে পড়বেন তিনি। কারণ এ মূহূর্তে তার অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।

বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে। বহুল আলোচিত ‘লজ্জা’ উপন্যাসে কট্টর ইসলামপন্থার কঠোর সমালোচনা করার অভিযোগে ১৯৯৪ সালে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার, সেই সঙ্গে তাকে দেশ ছাড়তেও বাধ্য করা হয়। ১৯৯১ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙার জেরে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন ছিল লজ্জা উপন্যাসের মূল উপজীব্য।

আরও পড়ুন: তসলিমা নাসরিনকে ‘মৃত’ দেখাচ্ছে ফেসবুক

বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পরবর্তী ১০ বছর সুইডেন, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন তসলিমা নাসরিন। এ সময়সীমার মধ্যে সুইডেনের নাগরিকত্বও নেন তিনি। ২০০৪ সালে কলকাতায় ফেরেন তিনি।

কিন্তু ২০০৭ সালে তাকে ভারত থেকে বিতাড়নের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে কলকাতার কট্টরপন্থি মুসলিমরা। পরিস্থিতি শান্ত করতে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্য সরকার তসলিমাকে কলকাতা ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। সে সময় কলকাতা থেকে নয়াদিল্লিতে চলে যান তিনি এবং সেখানে কয়েক মাস থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। যুক্তরাষ্ট্রে ৩ বছর অবস্থানের পর ২০১১ সালে ফের নয়াদিল্লি ফিরে আসেন তসলিমা। তারপর থেকে সেখানেই থাকছেন তিনি।  
তথ্যসূত্র : এএনআই