মরিশাসের হাতে গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপপুঞ্জ তুলে দেওয়ার ঘোষণা যুক্তরাজ্যের
অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পর ভারত মহাসাগরের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব মরিশাসের হাতে তুলে দিচ্ছে যুক্তরাজ্য। দীর্ঘ আলোচনার পর একটি চুক্তির আওতায় এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্য দ্বীপপুঞ্জটি মরিশাসের কাছে হস্তান্তর করবে। চুক্তিটি এখনও চূড়ান্ত হওয়া বাকি। তবে দুই পক্ষই যত দ্রুত সম্ভব চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রবালপ্রাচীর দিয়েগো গার্সিয়াও রয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্র তার নৌবাহিনী ও দূরপাল্লার বোমারু বিমানের জন্য সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে।
বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী এক যৌথ ঘোষণায় বলেছেন, কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিরোধের অবসান হতে চলেছে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। তবে মরিশাসকে চাগোস ফিরিয়ে দেওয়া হলেও এর অন্তর্ভুক্ত ছোট ও প্রবালসমৃদ্ধ দিয়েগো গার্সিয়াতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ঘাঁটি থেকে যাবে।
আর এই ঘাঁটি সেখানে রেখে দেওয়ার শর্তেই মরিশাসের চাগোস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব ফিরে পাওয়ার চুক্তিটি সামনে এগুতে পেরেছে; বিশেষ করে, অঞ্চলটিতে পশ্চিমা দেশগুলো এবং ভারত ও চীনের মধ্যকার ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়তে থাকার এই সময়ে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রভিন্দ জুগনাথ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটি আমাদের সম্পর্কের বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও আইনের শাসনের প্রতি আমাদের স্থায়ী প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ।’
নেতারা আরও বলেন, তারা দিয়েগো গার্সিয়ায় বিদ্যমান ঘাঁটির দীর্ঘমেয়াদী, সুরক্ষিত এবং কার্যকর পরিচালনা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিবিসি বলেছে, চুক্তিটি ‘অতীতের সব ভুল শুধরে দেবে এবং চাগোসিয়ানদের কল্যাণের সমর্থনে উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিকেও সামনে নিয়ে আসবে।’
১৯৬৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্য চাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় এবং এখানে বসবাসরত ১ হাজার অধিবাসীকে জোর করে উচ্ছেদ করে। এ ঘটনার জন্য যুক্তরাজ্য পরে ক্ষমাও চেয়েছে। মরিশাস সরকারের অভিযোগ ছিল, যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার বিনিময়ে তাদেরকে বেআইনিভাবে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয়েছে।