ভারতে ‘স্কুলের সমৃদ্ধির জন্য’ দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রকে বলি!
‘স্কুলের সমৃদ্ধির জন্য’ দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে ‘বলি’ দেওয়ার উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্কুলের মালিকদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারতের উত্তর প্রদেশের হাতরাস জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, জেলার সাহাপাউ এলাকার রসগাওন গ্রামের ডিএল পাবলিক স্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে। 'তান্ত্রিক' আচার অনুষ্ঠানে বিশ্বাসী স্কুলের মালিক জাসোধন সিং তার ছেলে ও স্কুলের পরিচালক দীনেশ বাঘেলকে স্কুল এবং তার পরিবারের সমৃদ্ধির জন্য একটি শিশুকে বলি দিতে বলেন। স্কুলটিতে শিক্ষার্থী কম ভর্তি হচ্ছিল। জাসোধন সিং ঋণ নিয়ে স্কুলটি খুলেছিলেন।
স্কুলের মালিক ও পরিচালক ছাড়াও প্রধান শিক্ষক লছমন সিং, এবং দুই শিক্ষক রামপ্রকাশ সোলাঙ্কি ও বীরপাল সিংকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, নিহত শিশুর নাম কৃতার্থ। ময়নাতদন্তে জানা গেছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
হাতরাসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) অশোক কুমার সিং বলেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্কুলের হোস্টেল থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেন রামপ্রকাশ সোলাঙ্কি, দীনেশ বাঘেল ও জাসোধন সিং। তারা শিশুটিকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান বলি দেওয়ার জন্য। কিন্তু শিশুটি জেগে উঠে কান্নাকাটি শুরু করলে তাড়াহুড়ো করে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় আরেক শিক্ষক বীরপাল সিং এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক লছমন সিংও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তারা জায়গাটি পাহারা দিচ্ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই ছাত্র স্কুলের প্রাঙ্গণে অবস্থিত স্কুলের হোস্টেলে থাকত। হাতরাসের মৌলিক শিক্ষা কর্মকর্তা (বিএসও) স্বাতী ভারতী স্কুলটি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি এ ঘটনার তদন্ত করতে আদেশ দিয়েছেন। তদন্ত শেষে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
স্বাতী আরও জানান, স্কুলটি অনুমোদন ছাড়াই প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চলছিল। হোস্টেলটিও অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল।
এ ঘটনার আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর আরেকটি শিশুকে বলি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ওই শিশুটি শ্বাসরোধ করার সময় চিৎকার করে ওঠায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরে শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলে দেখা যায় তাকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
পুলিশ তদন্তে করে স্কুল প্রাঙ্গণে টিউবওয়েলের পাশে একটি কক্ষ থেকে পূজার উপকরণ, একটি রশি, ধর্মীয় ছবি এবং একটি চাবি উদ্ধার করেছে। [সূত্র: দ্যা হিন্দু]