২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:১৯

৩২ বছর বয়সে হিজবুল্লাহর প্রধান, বাবা ছিলেন সবজি বিক্রেতা

হাসান নাসরুল্লাহ

নিহত হয়েছেন লেবাননের ইরানপন্থী প্রতিরোধ যোদ্ধাদল হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) হিজবুল্লাহর সদর দপ্তর লক্ষ্য করে চালানো হামলায় নিহত হন তিনি। আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হিজবুল্লাহ।

লেবাননের শিয়া মুসলিম সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান শেখ হাসান নাসরুল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যে অন্যতম পরিচিত এক মুখ ও সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের একজন।

১৯৯২ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। ওই বছর গোষ্ঠীটির সাবেক প্রধান নেতা আব্বাস আল-মুসাওই ইসরায়েলি হেলিকপ্টার হামলায় প্রাণ হারান। সেই ১৯৯২ সাল থেকে হিজবুল্লাহর প্রধানের দায়িত্বে আছেন তিনি।

হাসান নাসরুল্লাহ ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। তার বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। আবদুল করিমের ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।

হাসান নাসরুল্লাহ ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। তার বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। আবদুল করিমের ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে শিয়াদের আমল আন্দোলনে যোগ দেন নাসরুল্লাহ। এক সময় কোরআনের দীক্ষা নিতে ইরাকে যান তিনি। কিন্তু ১৯৭৮ সালে নিজ দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন নাসরুল্লাহ। কারণ ওই সময় শিয়া মুসলিমদের উপর ইরাক সরকার চাপ প্রয়োগ করছিল।

আরও পড়ুন: নিহত হাসান নাসরুল্লাহ—নিশ্চিত করেছে হিজবুল্লাহ

দখলদার ইসরায়েল ১৯৮২ সালে লেবাননে স্থল হামলা চালালে তাদের প্রতিহত করতে হিজবুল্লাহ নামের সশস্ত্র গোষ্ঠী তৈরি করে ইরানের চৌকস বিপ্লবী গার্ড। নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহতে যোগ দেয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে দলটির নেতৃত্বে চলে আসেন। নাসরুল্লাহ হিজবুল্লাহর দায়িত্ব নিয়ে তাদের সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তিতেও পরিণত করেন।

ইসরায়েলের কাছে ‘ছায়ামূর্তি’ তুল্য নেতা হাসান নাসরুল্লাহর ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। হিজবুল্লাহকে একটি রাজনৈতিক শক্তি ও বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠার পেছনে তাঁর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বছরের পর বছর লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকলেও নাসরুল্লাহর প্রতি তার সমর্থকদের শ্রদ্ধা–ভালোবাসা এতটুকু কমেনি।

হিজবুল্লাহকে একটি রাজনৈতিক শক্তি ও বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠার পেছনে তাঁর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের পাশাপাশি ইরাক ও ইয়েমেনের মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষণগত সহায়তা দিয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহারের লক্ষ্যে ইরানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটের এক সমৃদ্ধ ভান্ডার রয়েছে হিজবুল্লাহর।

সর্বশেষ গত বছরের ৮ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ–ইসরায়েল উত্তেজনা বেড়ে যায় । ওই দিন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট হামলার জের ধরে গাজায় নজিরবিহীন তাণ্ডব শুরু করে দেশটি। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে মাঝেমধ্যেই ইসরায়েলের অভ্যন্তর ও দখলকৃত গোলান মালভূমি এলাকায় রকেট হামলা চালাচ্ছে গোষ্ঠীটি।