অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আছে চীন
গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় থাকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আগের মত নিবিড়ভাবে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেছেন ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বুধবার ঢাকায় গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে চীন ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে পূর্ণ সম্মান জানানো হয়ে থাকে।
“আমরা বিশ্বাস করি, কেবল বাংলাদেশের জনগণই তাদের উন্নয়নের পথচলা নির্ধারণ করবে। বাংলাদেশে যে পরিবর্তনেই আসুক না কেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান অপরিবর্তিতই রয়েছে।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাড়ে ১৫ বছর পর ক্ষমতার পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ঢাকার একটি হোটেলে চীনা দূতাবাসের বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।
ইউনান ওভারসিজ কালচার অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারসহ চীন থেকে আসা সংস্কৃতিকর্মীদের জমকালো পরিবেশনার পাশাপাশি চীনা সংস্কৃতি ও তাদের বিভিন্ন কোম্পানির প্রদর্শনী ছিল এ আয়োজনে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
চীনা রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা দিক তুলে ধরে আগামী বছর দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির আয়োজন আরও বড় পরিসরে করার কথা বলেন। বাংলাদেশের সমর্থনে বেশ কিছু সহায়তামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, চীন আন্তরিকভাবে আশা করে, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় সংস্কার করবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এগিয়ে নেবে এবং জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তার জন্য ১০০ শতাংশ পণ্যকে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে চীনের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা অনুষ্ঠানে আবার উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দেড় মাসের মধ্যে চীনের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ৮৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তার মতে এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রগতি এবং দুদেশের সম্পর্কের বিষয়ে চীনের আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ ঘটাচ্ছে।
চীনের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ৭৫ বছরে বিশ্বের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে চীন অসামান্য অবদান রেখেছে। সব অংশীজনের সহযোগিতায় উন্নয়ন, অন্তর্ভূক্তিমূলক, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর পৃথিবী গড়তে চায় চীন। যেখানে সবাই স্থায়ী শান্তি, সর্বজনীন নিরাপত্তা ও অভিন্ন সমৃদ্ধি উপভোগ করবে।
তিনি বলেন, ২০১৩ থেকে ১০ বছরে চীনের অর্থনীতি গড়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে; বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে গড়ে ৩০ শতাংশ। চলতি বছরও চীনের অর্থনীতি আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে যাচ্ছে।