যে কারণে ভারতে ইলিশের দাম বাড়ছে হু হু করে
সারদীয় দুর্গাপূজার আগে ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতের বাজারে পৌঁছানোর পথ অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার সরকারের আমলে শুরু হওয়া এই ‘ইলিশ কূটনীতি’তে এবার ছেদ পড়েছে। এতে ভারতের ইলিশের বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে জানায় দেশটির গণমাধ্যম।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আমরা ইলিশ রপ্তানি করার অনুমতি দিতে পারি না, যখন আমাদের নিজেদের লোকজন এগুলো কিনতে পারে না। শেখ হাসিনা আমলে পূজার আগে পশ্চিমবঙ্গে টনকে টন পদ্মার ইলিশ গেলেও এবার আর যাচ্ছে না; তাই পূজার আগে ভারতের বাজারে ইলিশের ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং এর জেরে দাম বাড়ছে।
ইন্ডিয়া টুডের খবর অনুযায়ী, আগামী অক্টোবরে দুর্গাপূজা হবে। তার ঠিক আগমুহূর্তে ভারতে এই মূল্যবান মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও বিশেষ এই সময়ে খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ খেতে পছন্দ করেন কলকাতার বাঙালি বাবুরা।
বাংলাদেশে ইলিশের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মাছটি রপ্তানি বন্ধ রাখে সরকার। ভারতের জন্য বরাবরই মনখোলা ছিলেন শেখ হাসিনা। তাই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে যেকোনো উৎসবের আগে ভারতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশের বড় বড় চালান পাঠিয়েছেন তিনি। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের নিদর্শন হিসেবে এই নিয়ম অনুসরণ করে আসছিল আওয়ামী লীগ সরকার।
তবে ভারতে ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আগের এই নীতি থেকে সরে এসেছে নতুন সরকার।
তবে বাংলাদেশের সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলেও ভারতের মাছবাজারে এখনো পদ্মার ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দিল্লির সিআর পার্কের মার্কেট-১-এর একজন মাছ বিক্রেতা ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, গাজীপুরের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা আমাদের বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এখন মিয়ানমার হয়ে আসছে। যে কারণে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এক থেকে এক দশমিক তিন কেজি ওজনের বাংলাদেশি একটি ইলিশ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। কয়েক মাস আগে এই মাছের দাম কিলোপ্রতি ছিল ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা।
এবারের দুর্গাপূজার সময়ও বাংলাদেশি ইলিশ পাওয়া যাবে। তবে সরবরাহজনিত সমস্যার কারণে ক্রেতাদের বেশি টাকা গুনতে হবে বলে জানান তিনি।