গাজা শান্তিরক্ষা করবে আরব যৌথবাহিনী: বাইডেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নয়, গাজা শান্তি নিশ্চিতের কাজ করবে আরব দেশগুলোর যৌথবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাইডেন এই ইঙ্গিত দেন। এই যৌথ বাহিনীতে মিসর থেকে শুরু করে সৌদি আরব পর্যন্ত দেশগুলোর বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, গাজা শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে বাইডেন এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাইডেন বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনীকে গাজায় না রেখে গাজার রূপান্তর ও শান্তি রক্ষার বিষয়ে আমরা আরব দেশগুলোকে পেয়েছি। বিশেষ করে মিসর থেকে শুরু করে সৌদি আরব পর্যন্ত দেশগুলো এই প্রক্রিয়ার অংশ হবে।’
বাইডেন যুদ্ধ পরবর্তী গাজা কীভাবে চলবে বা সেখানে কী ঘটবে সে বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রথম থেকেই প্রশ্ন ছিল, গাজায় যুদ্ধের পর কী হবে?’ তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ পরবর্তী গাজায় ইসরায়েলের কোনো দখলদারিত্ব থাকবে না। পাশাপাশি মানবিক সাহায্যও দ্রুত প্রবেশ করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন গাজার উপকূলে স্থাপিত অস্থায়ী মার্কিন জেটির অপসারণের বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি হতাশ হয়েছি যে, গাজায় মানবিক সহায়তা ত্বরান্বিত করার জন্য আমরা কিছু জিনিস সামনে রেখেছিলাম কিন্তু তা সাফল্যের মুখ দেখেনি।’
বাইডেন এ সময় গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধকৌশলকে আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধকৌশলের সঙ্গে তুলনা করেন। ইসরায়েল যেমন হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্য গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে তেমনি ২০০১ সালে আল-কায়েদাকে ধ্বংস করার জন্যও যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করেছিল। বাইডেন জানান, ২০০১ সালে আল-কায়েদা টুইন টাওয়ারে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র যে ভুল করেছে তা যেন ইসরায়েল না করে সে বিষয়ে তিনি শুরু থেকেই বলে আসছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বলেন, আফগানিস্তানে প্রবেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভুল ছিল। এমনকি ২০১১ সালে পাকিস্তানে আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পরও আফগানিস্তানে প্রবেশ ভুলই ছিল। বাইডেন বলেন, ‘কোনো জায়গা দখল করার দরকার নেই। যারা কাজ করতে সক্ষম তাদের সেই কাজটি করতে এগিয়ে দিন।’
বাইডেন বলেন, গাজা ইস্যুতে ইসরায়েলের উচিত নয় হামাসকে ধ্বংস করার বিষয়ে কট্টর মনোভাব আরও পোক্ত করা। এ সময় তিনি জিম্মি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য মিশর ও কাতারে চলমান আলোচনার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনো সুযোগ আছে। এই যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, ইসরায়েলকে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মতো হামাস নেতাদের পিছু নেওয়া থেকে দূরে সরে যেতে হবে।’ এ সময় তিনি ইসরায়েলকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আমরা আপনাদের সিনওয়ার ও তাঁর সঙ্গীদের খুঁজে পেতে সাহায্য করব।’ৃ