২০ জুন ২০২৪, ২০:৫৩

৩০-৩২ লাখ টাকায় মেডিকেল ভর্তির প্রশ্নপ্রত্র বিক্রি ভারতে

নিট-এ অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ  © সংগৃহীত

ভারতের ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি এন্ট্রান্স টেস্ট আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ২০২৪ (এনইইটি) প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলায় বড় তথ্য সামনে এসেছে। হবু ডাক্তারদের যোগ্যতা নির্ণায়ক এই পরীক্ষায় আগেই বড় অনিয়ম এবং প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। এবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতা ও বিহারের বাসিন্দা অমিত আনন্দ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অমিত জানিয়েছেন, ৩০-৩২ লাখ টাকার বিনিময়ে পড়ুয়াদের প্রশ্নপত্র বিক্রি করা হয়েছিল!

নিট হয়েছিল গত ৫ মে। অমিত জানিয়েছেন, পরীক্ষার আগের দিন তাঁর হাতে প্রশ্নপত্র আসে। তাই টাকা দেওয়া পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় পেয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, অমিত বেআইনিভাবে একটি কোচিং তথা পরামর্শদাতা সংস্থা চালাতেন। তাঁর আসল বাড়ি বিহারের মুঙ্গের জেলায়। কিন্তু ইদানীং তিনি পটনার এজি কলোনিতে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। অমিতের বিরুদ্ধে পটনার শাস্ত্রীনগর থানায় মামলা রুজু হয়। তার পরই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করে বিহারের আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা (ইএইউ)।

ইতিমধ্যেই নিট-এর প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে অমিতসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন দানাপুর পুরসভার জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সিকন্দরকুমার যাদবেন্দু। যাদবেন্দু পুলিশকে জানান, তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েক জন নিট পরীক্ষার্থী সাহায্য করার আর্জি নিয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। তার পর দরাদরি করে প্রশ্নপত্র বিক্রির দাম স্থির হয়। সিকন্দর যোগাযোগ করেন অমিতের সঙ্গে। পরীক্ষার আগের দিন ওই পরীক্ষার্থীদের পটনার রামকৃষ্ণনগর এলাকার একটি ‘নিরাপদ’ জায়গায় রাখা হয়।

অমিতের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে পুলিশ বেশ কিছু পোড়া প্রশ্নপত্র পেয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশকে অমিত জানিয়েছেন, আগেও বেশ কিছু পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আগাম তাঁর হাতে এসেছিল। কিভাবে অমিত প্রভাব খাটিয়ে এত গুরুত্বপূর্ণ এক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আগেভাগেই হাতে পেয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এর মধ্যেই এক গ্রেফতার পরীক্ষার্থী দাবি করেছেন, তাঁরা পরীক্ষার আগে যে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছিলেন, তার সঙ্গে আসল প্রশ্নের হুবহু মিল আছে।

প্রসঙ্গত, এ বছর ৫ মে ভারতজুড়ে ও বিদেশে এনইইটি পরীক্ষা হয়। ৪ জুন ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় হাজার হাজার পরীক্ষার্থী অস্বাভাবিকভাবে বেশি নম্বর পেয়েছেন। এরপর প্রশ্নপত্রে ভুল থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। এ জন্য পুনরায় পরীক্ষার দাবি ওঠে; আদালতে কয়েক ডজন পিটিশনও দাখিল করা হয়েছে।

সূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন