ক্লাসে হিজাবের বিধিনিষেধের মুখে চাকরি ছাড়তে ‘বাধ্য’ হলেন অধ্যাপক
‘হিজাব পরে ক্লাস নেওয়া যাবে না’ কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন বিধিনিষেধের মুখে চাকরি ছাড়তে ‘বাধ্য’ হয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কবরডাঙার এলজেডি আইন কলেজের অধ্যাপক সানজিদা কাদের নামের এক শিক্ষক। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অধ্যাপক সানজিদা কাদের। এরপরই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
জানা গেছে, বীরভূম জেলার রামপুরহাটের মেয়ে সানজিদা কাদের। গত রমজনের পর থেকেই তিনি হিজাব পরে কলেজে আসছেন। এতদিন তাকে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে। তবে সম্প্রতি তিনি হিজাব পড়ে কলেজে আসার পর কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে তাকে হিজাব পড়ে স্কুলে আসতে নিষেধ করে। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে জারি করা হয় পোশাকবিধি।
শিক্ষিকার অভিযোগ, পরিস্থিতি ক্রমশ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এই জুন মাসের পাঁচ তারিখ কলেজ থেকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
সানজিদা কাদের জানান, ইরানে যে হিজাব বিরোধী আন্দোলন চলছে তাকে সমর্থন জানাই। আইনের ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে আমি মনে করি, ধর্ম নিরপেক্ষ দেশে কী পরব তা কেউ ঠিক করে দিতে পারে না। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষে এই বিষয়ে একবারেই অনমনীয় ছিল। তাই কিছুটা বাধ্য হয়েই আমি চাকরি থেকে ইস্তফা দিই।
ইতিমধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন সানজিদা। অভিযোগ জানিয়েছেন সংখ্যালঘু কমিশনেও। এদিকে বিষয়টি জানতে পেরেই ওই অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন পুলিশকর্তা হুমায়ুন কবির। এই বিষয়ে এলজেডি ল কলেজের পরিচালক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনাও করেছেন হুমায়ুন কবীর।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেই আমার খারাপ লেগেছে। কারণ ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এই জিনিস চলতে দেওয়া যায় না। তাই নিজেই উদ্যোগী হয়েছি। দীর্ঘক্ষণের পর সমাধান সূত্রও পাওয়া গেছে। তাতে আমি খুশি।
কলেজের চেয়ারম্যান গোপাল দাস জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের পোশাকবিধির কথা। কর্মীদের পোশাকী ট্রাউজ়ার্স, শাড়ি, সালোয়ারের কথা বলা আছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ড্রেস কোডে ধর্মীয় কিছু পরা যাবে না।’