২৫ মে ২০২৪, ১৯:০৪

যুক্তরাজ্যের স্টুডেন্ট ভিসা কড়াকড়ির প্রস্তাবে বিরোধিতার মুখে ঋষি সুনাক

  © সংগৃহীত

নেট মাইগ্রেশন নিয়ন্ত্রণ ও ভুয়া স্টুডেন্ট আসা বন্ধ করার জন্য স্টুডেন্ট ভিসায় কড়াকড়ি আরোপের প্রস্তাবে বিরোধিতা মুখে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সরকারের একটা অংশ বলছে, বিদেশি স্টুডেন্ট কমে গেলে ব্রিটিশ অর্থনীতি সমস্যার সম্মুখীন হবে।  

জানা গেছে, নতুন নিয়মে মেধাবী স্টুডেন্ট রিক্রুট করা, প্রতি বছর ইংরেজি টেস্ট দেওয়ার নিয়ম চালু করা, ভুয়া স্টুডেন্ট আনলে ইউনিভার্সিটির লাইসেন্স বাতিল, এজেন্টদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়ার মতো ব্যবস্থা থাকবে। 

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ব্রিটিশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, ব্রিটেনে ভবিষ্যতে শুধু মেধাবী ছাত্ররা আসতে পারবেন।

ব্রিটেনে একজন বিদেশি শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট শেষ করার পর গ্র্যাজুয়েট ভিসা রুটের আওতায় দুই বছর পর্যন্ত থাকতে পারেন এবং চাকরি করতে পারেন। কিন্তু নেট মাইগ্রেশন কমাতে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক গ্র্যাজুয়েট ভিসা রুট বাতিল করতে চাচ্ছেন। তিলি এখন মাইগ্রেশন সিস্টেমের ত্রুটিগুলো বন্ধ করতে এবং ভিসার অপব্যবহার রোধ করার জন্য কিছু স্বাভাবিক সংস্কার করতে চান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি জানিয়েছেন, বিবেচনার মধ্যে থাকা নতুন সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে বিদেশি শিক্ষার্থী রিক্রুট করা এজেন্টদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ এবং প্রতিশ্রুতি মতো স্টুডেন্ট আনতে ব্যর্থতার জন্য জরিমানা করা।

তিনি বলেন, যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষে যুক্তরাজ্যে থাকার জন্য গ্র্যাজুয়েট ভিসা রুট ব্যবহার করে তারা বাধ্যতামূলক প্রতিবছর ইংরেজি টেস্টের সম্মুখীন হতে পারেন। এছাড়া যেসব ইউনিভার্সিটি এবং কলেজে ড্রপআউট রেট বেশি তাদের ফরেন স্টুডেন্ট নিয়োগ লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।

এদিকে, ঋষি সুনাকের কঠোর প্রস্তাবের পর চ্যান্সেলর জেরেমি হান্ট তীব্র বিরোধিতা করলে সুনাক আরও কিছু প্রস্তাব থেকে সরে আসেন। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি এবং শিক্ষামন্ত্রী গিলিয়ান কিগান জানান, যে এই পলিসি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ব্রিটিশ অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে।

অপরদিকে, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ফরেন স্টুডেন্ট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে গ্র্যাজুয়েট ভিসা রুট বাতিল করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান স্টুডেন্টস অ্যান্ড অ্যালামনাই ইউনিয়ন ঋষি সুনাককে সতর্ক করে একটি চিঠিও দিয়েছে। তারা বলছে, গ্র্যাজুয়েট ভিসা রুটের কারণে ফরেন স্টুডেন্টদের আগ্রহের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু যুক্তরাজ্য। এটি বাতিল করা হলে বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাজ্য তার অবস্থান হারাবে।

জানা গেছে, গ্র্যাজুয়েট ভিসা রুটের আওতায় যত ফরেন স্টুডেন্ট যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে তার ৪০ শতাংশ ইন্ডিয়ান স্টুডেন্ট।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ভিসা রুট বাতিলের বিরোধিতা করেছে প্রায় ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর। ফরেন স্টুডেন্টদের ওপর নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তারা একটি চিঠি দিয়েছে।

মূলত ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়ের বড় একটি অংশ আসে ফরেন স্টুডেন্টদের দেওয়া ফি থেকে। তাই ফরেন স্টুডেন্ট আসা বন্ধ হয়ে গেলে বা কমে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনকাম ব্যাপকভাবে কমে যাবে। এমনকি ইতোমধ্যে ফরেন স্টুডেন্ট কমে যাওয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া লোকাল কমিউনিটিসহ ব্রিটিশ অর্থনীতিও সমস্যার সম্মুখীন হবে।