বাংলাদেশের মতো যে দেশের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন  © সংগৃহীত

নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেমন নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, অনেকটা একই রকম ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে জর্জিয়ার জন্য। দেশটিতে এ বছরের অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (২৪ মে) এক বিবৃতিতে তার আগেই কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাক্টের অধীনে জর্জিয়ার বিরুদ্ধে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ ঘোষণা দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, সহিংস, শক্তি অথবা জবরদস্তি করে যেসব ব্যক্তি- হোন তিনি বর্তমান বা রাষ্ট্রের সাবেক কোনো কর্মকর্তা অথবা বিরাষ্ট্রীয় কেউ, যদি তারদেরকে দেখা যায় জনগণের নাগরিক অধিকার বা রাজনৈতিক অধিকার চর্চায় বাধা দেয়ার জন্য দায়ী বা জড়িত তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

এই সঙ্গে তাদের পরিবারের বিরুদ্ধেও একই নীতি প্রয়োগ করা হবে। ২৩শে মে দেয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত কয়েক মাসে ক্ষমতাসীন জর্জিয়ান ড্রিম পার্টি ‘বিদেশি প্রভাবিত’ আইন ডেভেলপ এবং তা পাস করেছে। এই আইন জর্জিয়ার নাগরিকদের স্বাধীনভাবে সভা, সমাবেশ ও মত প্রকাশকে গলা টিপে ধরবে। সাংগঠনিক কার্যক্রমকে হেয় করবে। যেসব নিরপেক্ষ মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চমান সম্পন্ন তথ্য সরবরাহে কাজ করছে তাদের সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। এই আইনের বিরুদ্ধে জর্জিয়ার নাগরিকরা তাদের বিরোধিতা জোরালোভাবে জানিয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, আমরা দেখেছি শান্তিপূর্ণ ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমনপীড়ন চালাতে ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতা ব্যবহার করা হয়েছে। এ বিষয়টির ইঙ্গিত আমরা পরিষ্কারভাবে দেখতে পেয়েছে। ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইন’ এবং বৈধ ভিন্ন মতাবলম্বীদের নীরব করে দিতে নিষ্পেষণমূলক কৌশল ব্যবহার জর্জিয়ার গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে। জর্জিয়ার জনগণ এসবের দাবিদার। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের এই বিষয়টি দীর্ঘদিনের জর্জিয়ার লক্ষ্যের বিপরীত- যা সংবিধানে প্রতিফলিত হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, তাদের লক্ষ্য ইউরো-আটলান্টিকের সঙ্গে একীভূত হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব। এমন কর্মকাণ্ডের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জর্জিয়ার বিরুদ্ধে নতুন ভিসা নীতি প্রয়োগ করছে। এটা ওইসব ব্যক্তি ও তাদের নিকট পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হবে- যারা জর্জিয়ার গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী অথবা জড়িত। নাগরিক সমাজকে দমিয়ে রাখা, জর্জিয়ায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে সহিংসতা বা ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে দমিয়ে রাখার জন্য যারা দায়ী হবে, তাদের বিরুদ্ধেই এই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, জর্জিয়ার সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে জর্জিয়ায় নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে, নির্বাচনের সময় অথবা নির্বাচনের পরে যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বা প্রতিষ্ঠানকে বাধাগ্রস্ত করেন কেউ, তিনি যেই হোন- তিনি এবং তার নিকট পরিবারের সদস্যরা এই ভিসা নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে সফর করতে পারবেন না।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট আরও বলছে, আমাদের আশা - জর্জিয়ার নেতারা খসড়া আইনটি পুনর্বিবেচনা করবেন এবং তাদের জাতির গণতান্ত্রিক ও ইউরো-আটলান্টিক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নেবেন। আমরা যখন আমাদের দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পর্যালোচনা করবো, তখন আমরা আমাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে জর্জিয়ার পদক্ষেপগুলো বিবেচনায় নেব।

 

সর্বশেষ সংবাদ