৫৪ বছরে ৩০ বার এভারেস্ট জয় করে বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন রিতা শেরপা

কামি রিতা শেরপা
কামি রিতা শেরপা  © সংগৃহীত

টানা ৩০ বার পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছেন ৫৪ বছর বয়সী নেপালের পর্বত আরোহী কামি রিতা শেরপা। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো এভারেস্টে পর্বতারোহণ করেন তিনি। আজ বুধবার (২২ মে) ৩০ তম বারের মতো এভারেস্ট জয় করেন তিনি। এর আগে কোন পর্বতারোহী এত বেশিবার এভারেস্ট জয় করেননি। মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে তিনি এক সেশনে দ্বিতীয়বারের মতো পর্বত চূড়ায় ওঠেন।

এর আগে সবচেয়ে বেশি (২৯ বার) এভারেস্ট জয়ের রেকর্ডও ছিল তাঁরই। এবার তিনি নিজের সেই রেকর্ড ভেঙেছেন। কামি রিতার পর্বত আরোহণের বিষয়টি নিয়ে কাজ করা সংস্থা সেভেন সামিট ট্রেকসের কর্মকর্তা মিংমা শেরপা বিষয়টি নিশ্চিত করে এএফপিকে বলেন, ‘কামি রিতা আজ সকালে (এভারেস্টের) চূড়ায় পৌঁছেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি এভারেস্টের চূড়ায় সর্বোচ্চ ৩০ বার আরোহণের নতুন রেকর্ড গড়লেন।’ 

প্রায় ৮ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠতে হয় এভারেস্টে। ১৯৯৪ সালে তাঁর এভারেস্ট-যাত্রা শুরু হওয়ার পর প্রায় প্রতিবছরই চূড়াটি জয় করছেন। এর মধ্যে বাদ পড়ে কেবল ২০১৪, ২০১৫ ও ২০২০ সাল। তিন বছর তিনি চূড়ায় উঠতে পারেননি কারণ, কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কারণে পর্বতটি বন্ধ করে রাখে।

তিনি অনেক শেরপা গাইডদের মধ্যে একজন, যার দক্ষতা প্রতি বছর বিদেশী পর্বতারোহীদের নিরাপত্তা এবং সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যারা পাহাড়ের চূড়া জয় করতে চায়।

মাউন্ট এভারেস্ট ছাড়াও বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ পাকিস্তানের কেটু (৮ হাজার মিটার উঁচু) জয় করেছেন কামি রিতা শেরপা। তার বাবা প্রথম শেরপা গাইডদের মধ্যে ছিলেন। তার এভারেস্ট আরোহণ ছাড়াও, কামি রিতা বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে কেটু, চো ওয়ু, মানাসলু এবং লোটসে।

বেস ক্যাম্পের একজন সরকারি কর্মকর্তা খিম লাল গৌতমের মতে, সকাল ৭:৪৯ মিনিটে রিতা ৮,৮৪৯-মিটার (২৯,০৩২-ফুট) চূড়ায় পৌঁছেছিলেন। এই বছরের ক্লাইম্বিং সিজনে তার প্রথম আরোহণ ছিল ১২মে বিদেশী আরোহীদের পথপ্রদর্শক।
তিনি গত বছর দুবার মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণ করেছিলেন, প্রথমটিতে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতে সর্বাধিক আরোহণের রেকর্ড স্থাপন করেছিলেন এবং এক সপ্তাহেরও কম পরে এটি প্রসারিত করেছিলেন।

৩০ বার এভারেস্টের চূড়ায় উঠলেন তিনি | প্রথম আলো

এভারেস্টে সর্বোচ্চবার আরোহণের দ্বিতীয় রেকর্ড যার, তিনিও একজন নেপালি, নাম পাসাং দাওয়া শেরপা। এ পর্যন্ত ২৭ বার এভারেস্টে উঠেছেন তিনি। উল্লেখ্য, নেপালের আঞ্চলিক ভাষায় এভারেস্টের নাম ‘সাগরমাতা’। 

হিমালয়ান ডেটাবেইস ও নেপালের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৩ সালে প্রথম এভারেস্ট বিজয়ের পর থেকে নেপালি ও তিব্বতি অংশ দিয়ে ১১ হাজার বারের বেশিবার চূড়ায় আরোহণ করেছেন পর্বতারোহীরা। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অবশ্য একাধিকবার জয় করেছেন সর্বোচ্চ শিখরটি। আর সর্বোচ্চ চূড়াটি জয় করার চেষ্টা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩২০ জনের বেশি।


সর্বশেষ সংবাদ