অভাবে মডেল হতে পারেননি, তিনবার ব্যর্থ তাসকিন এখন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা
ফ্যাশন জগতে বেশে পরিচিতি পেয়েছিলেন। স্বপ্ন দেখছিলেন মডেল হিসেবে দেশে পরিচিতি পাওয়ার। কিন্তু অভাবের কারণে স্বপ্ন ভেঙে যায়। বদলে যায় স্বপ্ন। পরপর তিনবার ব্যর্থ হয়েছেন ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা দিয়েছে। অবশেষে উত্তীর্ণ হন ইউপিএসসি পরীক্ষায়।
চতুর্থ বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়ে ৭৩৬ র্যাঙ্ক করেন তাসকিন খান। মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও তিনি এখন আইএএস কর্মকর্তা। এটিই ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরকারি চাকরি। দেশটির উত্তরাখণ্ডের দেহরাদুনে জন্ম তার। এলাকার স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা করেছেন।
গণিত ও বিজ্ঞানে তেমন আগ্রহ ছিল না। পরীক্ষা দিলেও এ বিষয়গুলোয় ভালো ফল হতো না। তাসকিন বলেছিলেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত গণিত ও বিজ্ঞানে তেমন ভালো ছিলেন না। পরে এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করেন। পরে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর নিয়ে পাস করেন।
বাস্কেটবল খেলায়ও পারদর্শী ছিলেন তাসকিন। জাতীয় স্তরে বিতর্ক প্রতিযোগিতাতেও অংশ নিয়েছেন। মডেলিং করার স্বপ্ন ছিল তাসকিনের। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে দু’বার সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। পরে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের স্বপ্ন দেখেন। সে সময় চাকরি থেকে অবসর নেন বাবা। পরিবারে আর্থিক টানাপড়েন শুরু হয়।
অভাবের ফলে স্বপ্ন ভেঙে যায় তাসকিনের। ফলে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। স্নাতক শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য অন্য কলেজে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বেতন বেশি হওয়ায় ভর্তি হতে পারেননি। তাসকিন তখন সিদ্ধান্ত নেন, ভারতের অন্যতম কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন। কিন্তু এ জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণের। কিন্তু আর্থিক টানাপড়েনের কারণে বেশি বেতন দিয়ে ভর্তি হতে পারেননি।
আরো পড়ুন: লোভনীয় বেতনে ভূতুড়ে চাকরির বিজ্ঞাপন বেড়েছে, কীভাবে বুঝবেন
তাসকিন জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে ইউপিএসসি প্রস্তুতির অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে একজনের আলাপ ছিল যিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলেই অনুপ্রাণিত হন।
ইউপিএসসির প্রস্তুতির জন্য মুম্বাই যান তাসকিন। সেখানে বিশেষ পরীক্ষা দিয়ে তিনি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। সেখানে কোনও খরচ লাগে না। পরে পড়াশোনার জন্য দিল্লি চলে যান তাসকিন। সেখানে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন।
পরে তিনবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেও সফল হননি তাসকিন। ২০২০ সালে চতুর্থবারের চেষ্টায় সফল হন। ৭৩৬তম র্যাঙ্ক করেন তরুণী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর অনুসারীও অনেক। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুরাগী ২৬ হাজারের বেশি। খবর: আন্দবাজার।