নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে বিশ্বে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
বিশ্বে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগের মাধ্যমে হত্যা মামলার এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় কেনেথ স্মিথ নামের ওই আসামির ‘ভয়ংকর’ এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
যদিও এভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়ে আগেই সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্বে কোনও আসামির এভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নজির এটিই প্রথম। এর আগে নাইট্রোজেন গ্যাসের মাধ্যমে ‘ভয়ংকর পদ্ধতিতে’ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আটকাতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেনেথ স্মিথের আইনজীবীরা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এবং নিম্ন আপিল আদালত এই আবেদন খারিজ করে দেন।
তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, এটিই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সবচেয়ে কম বেদনাদায়ক ও মানবিক পদ্ধতি। আলবামা অঙ্গরাজ্য প্রাণনাশক ইনজেকশনের পরিবর্তে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। প্রতিবাদ জানিয়েছিল জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও। তবে তাতেও কাজ হয়নি।
দুবছর আগেও একবার স্মিথকে প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু রাত ১২টা বাজার আগে মৃত্যুসূচ ফোটানোর জন্য কেনেথের শিরা খুঁজে পাননি সংশ্লিষ্টরা। যার ফলে মৃত্যুদণ্ডাদেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় এবং তিনি সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান। অবশেষে গতকাল নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে করা খুনের অপরাধে কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। দেশটির আলাবামা অঙ্গরাজ্যে ১৯৮৯ সালে ইলিজাবেথ সেনেটকে এক হাজার ডলারের বিনিময়ে হত্যা করেন স্মিথ। নিহতের নারীর স্বামী ছিলেন একজন ঋণগ্রস্ত ধর্মপ্রচারক। স্ত্রীর জীবন বিমার অর্থ সংগ্রহ করার জন্য তিনি কেনেথ স্মিথ ও ফরেস্ট পার্কারকে ভাড়া করেন। তদন্তকারীরা তাকে গ্রেফতার করতে এলে আত্মহত্যা করেন যাজক স্বামী।
২০১০ সালে পার্কারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হয় ৫৮ বছর বয়সী স্মিথের বিরুদ্ধেও। ফলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।