প্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষার ৪০ বছর পর যোগদানের চিঠি পেলেন ৬৬ প্রার্থী
প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির জন্য আশির দশকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ৬৬ জন চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু দীর্ঘ চার দশক পর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এসেছে সেই বহুপ্রতীক্ষিত চাকরির চিঠি। দীনবন্ধু ভট্টাচার্য তাদেরই একজন। তার বয়স এখন ৬৪।
ওই সময় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তিনি নিয়োগ পাননি এমন অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিলেন। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর নিয়োগের চিঠি এসেছে। কিন্তু এর মাঝে চলে গেছে ৪০টি বছর। তবে এমন আরও ৬৬ জন একইভাবে ভুক্তভোগী ছিলেন যারা দীর্ঘ লড়াইয়ের পর চাকরির চিঠি পেয়েছেন। তারা সকলেই এখন অবসরের বয়সসীমা অতিক্রম করেছেন।
চাকরির চিঠি হাতে পেয়ে কী করতে হবে প্রথমে বুঝতেই পারেননি দীনবন্ধু ভট্টাচার্য। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘প্রাথমিক শিক্ষকের জন্য যখন পরীক্ষা দিয়েছিলাম তখন আমি যুবক। সদ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক। চাকরির জন্য অপেক্ষা করতে করতে এখন আমার বয়স ৬৪। গতকাল হাতে অ্যাপয়েন্টমেন্টের চিঠি পেয়েছি। আমি একা নয়, আমার মতো ৬৬জন এই চিঠি পেয়েছে। এর মধ্যে ৪জন তো বেঁচেই নেই।’
আরও পড়ুন: জার্মানিতে কম সময়ে পাওয়া যাবে নাগরিকত্ব, নতুন আইন অনুমোদন
প্রসঙ্গত, নিয়োগ সংক্রান্ত এই মামলাটি করার সময় পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় ছিল বামেরা। বর্তমানে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ক্ষমতায় রয়েছে। গত কয়েক বছরে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে খবরের শিরোনামে রয়েছে এই রাজ্য। নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় বসে আন্দোলনও করছেন নবম-দশম এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীরা।
জানা যায়, ১৯৮৩ সালে জুনিয়র বেসিক ট্রেনিং দেয়া হতো। ওই বছর সারা রাজ্য জুড়ে যে নিয়োগ হয় তাতে কেউ নিয়োগ পেয়েছেন, কেউবা পাননি। সে সময় নিয়ম ছিল ৬০ শতাংশ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নেওয়া হবে। অন্যদিকে, মামলাকারীদের দাবি ছিল, যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তাদের সবাইকে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। এই দাবি জানিয়ে তারা আদালতের দ্বারস্থ হন।
৩০ বছর পর ২০১৪ সালে ওই মামলার রায় হয়। তবে সেটা রাজ্য সরকার মেনে না নিয়ে আপিল করলে অবশেষে ২০ ডিসেম্বর হাইকোর্ট চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে আদালতকে জানানোই হয়নি আবেদনকারীদের বয়সসীমা ৬০ অতিক্রম করেছে এবং তাদের মধ্যে ৪জন বেঁচে নেই।