ওপেনএআই-মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক টাইমসের মামলা
অনুমতি ছাড়াই তাদের লাখ লাখ নিবন্ধ ওপেনএআই ও মাইক্রোসফট ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ এনেছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে মামলাটি করে নিউইয়র্ক টাইমস।
মামলায় দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নিউইয়র্ক টাইমসের কপিরাইট লঙ্ঘন করা হয়েছে। একই মামলায় ওপেনএআইয়ে বিনিয়োগকারী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটকেও বিবাদী করা হয়েছে। শতকোটি ডলারের বেশি ক্ষতির জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠানকে (ওপেনএআই ও মাইক্রোসফট) দায়ী করা উচিত বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
টাইমস বলেছে, চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআই ও ‘কোপাইলট’ নামের এআই প্ল্যাটফর্মের নির্মাতা মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে কোনো মার্কিন শীর্ষ সংবাদমাধ্যমের প্রথম কপিরাইট মামলা এটি। কপিরাইট প্রশ্নে পত্রিকাটি নির্দিষ্ট কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করেনি। তবে, এর আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ‘শত কোটি ডলারও’ হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
এ মামলায় পত্রিকাটির অভিযোগ, ওপেনএআই ও মাইক্রোসফট পাঠকদের কাছে তথ্য প্রদানের বিকল্প উপায় হিসেবে তাদের লাখ লাখ নিবন্ধ ব্যবহার করেছে। এর মাধ্যমে ‘সাংবাদিকতায় নিউ ইয়র্ক টাইমসের যে বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে সেটা এই দুই প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে ব্যবহারের’ চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বর্তমান ঘটনাবলি সম্পর্কে জানতে চাইলে চ্যাটজিপিটি কখনো কখনো নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধগুলোর অংশবিশেষ হুবহু উদ্ধৃতি করবে। অথচ এই তথ্য বিনা পয়সায় (সাবস্ক্রিপশন) পাঠককে পড়তে দেয় না নিউইয়র্ক টাইমস।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চ্যাটজিপিটি যে কাজ করছে, তার মানে হলো, পাঠকেরা অর্থ প্রদান ছাড়াই নিউইয়র্ক টাইমসের আধেয় পেতে পারেন। এর অর্থ, নিউইয়র্ক টাইমস সাবস্ক্রিপশনের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনে পাঠকের ক্লিক থেকে আয় হারাচ্ছে।
তবে ওপেনএআই ও মাইক্রোসফট বলেছে, এআই পণ্যের প্রশিক্ষণের জন্য কপিরাইট সংশ্লিষ্ট কাজ ব্যবহার করা ‘ন্যায্য ব্যবহার’ বা ‘ফেয়ার ইউজ’-এর আওতায় পড়ে। আর এটা কেবলই আইনী মতবাদ, যা কপিরাইটযুক্ত কাজের নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট দপ্তরের ওয়েবসাইট বলছে, ‘পরিবর্তনযোগ্য’ কনটেন্টের ‘তথ্য বা বৈশিষ্ট্যে নতুন কিছু’ যোগ করা হলে তা ‘ন্যায্য’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
এর আগে ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে ওপেনএআই ও মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ডেভিড বালদাচি, জনাথন ফ্রাঞ্জেন, জন গ্রিশাম ও স্কট টুরো’র মতো জনপ্রিয় ঔপন্যাসিকরা। সে মামলায় তারা দাবি করেন, কোম্পানিগুলোর এআই ব্যবস্থা সম্ভবত তাদের বেশ কয়েক হাজার বই থেকে তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে।