২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২১

স্বপ্ন পূরণে ৭৮ বছর বয়সে ভর্তি হলেন স্কুলে

স্কুলে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে লালরিংথারা  © আনন্দবাজার

শেখার ইচ্ছা থাকলে বয়স বাধা নয়। এই কথাটি বাস্তবেও প্রমাণ করলেন লালরিংথারা। জীবনের ৭৮টি বসন্ত পার করে আবার পড়াশোনা শুরু করেছেন তিনি। ভারতের মিজোরাম-মায়ানমার সীমান্তের কাছে চাম্পাই জেলার খুয়াংলেং গ্রামে ১৯৪৫ সালে জন্ম লালরিংথারার। তাঁর বয়স এখন ৭৮ বছর।

৭৮ বছর বয়সে পৌঁছে নিজের স্বপ্নপূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লালরিংথারা। মাঝপথে স্কুল ছা়ড়তে বাধ্য হন তিনি। সাত দশক পর আবার স্কুলে ভর্তি হয়েছেন। বাড়ি থেকে রোজ তিন কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে পড়তে যান। ইংরেজি ভাষা রপ্ত করাই লক্ষ্য তাঁর।

ঝরঝরে ইংরেজি ভাষায় আবেদনপত্র লিখতে চান লালরিংথারা। ইংরেজি ভাষায় পডকাস্ট শুনতেও যেন কোনও সমস্যা না হয়, তাই এ ভাষা রপ্ত করতে চান।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে,  লালরিংথারার যখন দু’বছর বয়স, তখন বাবা মারা যান। মায়ের সঙ্গে একা থাকতেন। বাবার মৃত্যুর পর অর্থাভাবে পড়ে পরিবার। খুয়াংলেং গ্রামের একটি স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছিল তাকে। কিন্তু অর্থাভাবে বেশি দূর পড়তে পারেননি।

গ্রামের স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন লালরিংথারা। পড়াশোনা ছেড়ে মায়ের সঙ্গে চাষাবাদে হাত লাগিয়েছিলেন। কিছুদিন পর মিজোরামের নতুন রুয়াইকাম গ্রামে মায়ের সঙ্গে চলে যান। নতুন জায়গায় গিয়ে নতুন স্কুলে ভর্তি করানো হয় তাকে।

নতুন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন লালরিংথারা। সেখানেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। আবার চাষাবাদ শুরু করেন। ধানের জমিতে কাজ করে কোনও মতে রোজগার করতেন। নিজের চেষ্টায় স্থানীয় ভাষাও রপ্ত করেন। পাশাপাশি স্থানীয় গির্জার রক্ষী হিসাবেও কাজ শুরু করেন।

আরো পড়ুন: কর্ণাটকের স্কুলে হিজাব নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে

আর্থিক ভাবে সচ্ছল হওয়ার পর নিজের স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছা জাগে তাঁর। ২০১৮ সালে নতুন রুয়াইকাম গ্রামের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন লালরিংথারা। সে স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা জাগে লালরিংথারার।

কিন্তু নতুন রুয়াইকাম গ্রামের স্কুলে অষ্টম শ্রেণির পর পড়াশোনার ব্যবস্থা ছিল না। পড়াশোনা করবেন বলে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি স্কুলে ভর্তি হন লালরিংথারা। সে স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করেছেন। খবর: আনন্দবাজার।