হামাসের হামলায় গানের অনুষ্ঠানে ২৬০ জনসহ ইসরায়েলে নিহত ৭০০
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ১১০০ সামরিক ও বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি সংগীত উৎসবে অংশ নেওয়া আড়াই শতাধিক মানুষসহ ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে। এমনটি জানিয়েছে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে ইসরায়েলে আকস্মিক রকেট হামলার পর থেকে শুরু হওয়া হামাসের ‘অপারেশন আল-আকসা স্টর্ম’ রুপ নিয়েছে যুদ্ধাবস্থার। অপারেশনের শুরুতেই ইসরায়েলের একটি সংগীত উৎসবে হামলা চালায় হামাস। এতে অন্তত ২৬০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া এ পর্যন্ত ইসরায়েল সামরিক বাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তাসহ শতাধিক সামরিক ও বেসামরিক মানুষকে আটক করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস। খবর বিবিসি, সিএনএন।
তবে এ হামলার পর ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করেছে ইসরাইলের সশস্ত্র বাহিনী। গাজায় দফায় দফায় বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। হামলায় এ পর্যন্ত চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফলে হামলা-পাল্টা হামলায় দুই দেশে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ২৩ হাজার ফিলিস্তিনি ঘর-বাড়ি ছেড়েছেন। যেখানে ৭৪ হাজার ফিলিস্তিনি জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নেয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। ইসরাইলের সশস্ত্র বাহিনী বলছে, এই অবস্থায় অন্তত ১ লাখ রিজার্ভ সৈন্য ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ইসরায়েলে কয়েকজন আমেরিকান নিহত হবার খবর পেয়েছেন তারা এবং এর সত্যতা যাচাই করার কাজ চলছে। এছাড়া গাজা সীমান্তের কাছে কর্মরত ছিলেন একজন ব্রিটিশ নাগরিক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হামাস ও ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) নেতার সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট কথা বলেছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়া খবর দিয়েছে। তবে ওই দুই নেতার সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির কি আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের পক্ষ্য থেকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই হামলার পর ইসরায়েলের সীমানায় ঢুকে পায় ২২টি স্থানে অবস্থান নিয়ে ইসরায়েল বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়ায় তারা। দখলে নেই সামরিক ঘাঁটিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এ পর্যন্ত ইসরায়েলে সাত হাজারের বেশি রকেট হামলা চলিয়েছে তারা।
এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইরান হামাসকে সরাসরি সমর্থন জানালেও আমেরিকা, ফ্রান্সসহ ইউরোপের দেশগুলো ইসরায়েলের পাশে থেকে সাহায্যের ঘোষণা দিচ্ছে। ভারতও তাদের পক্ষে আছে বলে জানিয়েছে। তবে এই সংঘাতের জন্য ইসরাইলকেই দায়ী করেছে কাতার ও রাশিয়া।
ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যকার উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান। এ সময় ফিলিস্তিনের বেসামরিক নিরস্ত্র মানুষের ওপর ইসরাইল যেন কোনো হামলা না চালায় তার ওপর জোর দেন তিনি। এছাড়া চীন বলেছে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এ চলমান সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার উপায়।