১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৫৬

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় আরও দুই শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় আরও দু’জন গ্রেফতার হয়েছেন। রবিবার গ্রেফতার করা হলো দুই ছাত্র মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্তকে। এর পর তাদেরকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরী। 

বিচারক তাঁদের ২২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মৃত ছাত্রের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত শেষ করতে পারব বলেই আশা করছি।

রবিবার নদিয়ায় ছাত্রের বাড়িতে যান পশ্চিমবঙ্গের শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। সেখান থেকে বেরিয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে পকসো আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। তিনি জানান, এ ঘটনা পকসো আইনের অধীনে পড়ে। স্বপ্নদীপের ১৮ বছর বয়স হয়নি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ৯ মাস ৯ দিন। ছেলেটিকে উলঙ্গ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। দেহে সিগারেটের ছ্যাঁকা ছিল। নিজেও ফোন করে ভাইকে জানিয়েছিল, ওকে সমকামী বলা হচ্ছে। এটি যৌন নির্যাতনের পর্যায়ে পড়ে।

কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এবং হোস্টেলে সিসি ক্যামেরা নেই, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনন্যা। তাঁর মন্তব্য, দেশের আর পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নিয়ম আছে, এখানে তা মানা হবে না কেন? নাবালক হওয়ায় ছাত্রের নাম আর উল্লেখ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা। পুলিশ বলছে, যাদবপুরের ঘটনায় পকসো আইনের ধারা জুড়তে পারে।

রবিবার আদালতে মনোতোষের আইনজীবী অমি হক এবং দীপশেখরের আইনজীবী সৌম্যশুভ্র রায় আদালতকে জানান, এফআইআরে তাঁদের মক্কেলদের নাম নেই। তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা হতে পারে, হত্যার মামলা নয়। তবে সরকারি আইনজীবী পাল্টা যুক্তি দেখিয়ে বলেন, তদন্তে এ ঘটনায় অনেকেই জড়িত বলে ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসছে। তা ছাড়া এই ছাত্র বা প্রাক্তনীরাও সব বলছেন না। তাই ঘটনাটির গভীরে পৌঁছনোর জন্যই পুলিশি হেফাজত দেওয়া হোক।

যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে দীপশেখর বাঁকুড়ার বাসিন্দা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাবা-মা জানান, ছেলের গ্রেফতারির খবর পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কিছুতেই বিশ্বাস করেন না, ছেলে খারাপ কোনও কাজ করতে পারেন। কারণ, ছোট থেকেই দীপশেখর পরোপকারী।

মনোতোষের বাড়ি হুগলির আরামবাগে। সমাজবিদ্যার দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের বাবা শান্তিনাথ এবং মা টগর ঘোষ একটি ‘ফাস্ট ফুড’র দোকান চালান। মনোতোষের বাবা বলেন, ছেলে একটা কথাই বলেছিল— এই ঘটনায় পুলিশ আমাকে ডাকতে পারে। তোমরা চিন্তা করো না। তাদের ছেলে কারও মৃত্যুর কারণ হতে পারেন না বলে বিশ্বাস তাদের। আনন্দবাজার।