দুই রাজনৈতিক নেতার বিরোধ নিয়ে স্কুলের অংক পরীক্ষার প্রশ্ন
দশম শ্রেণির গণিত প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্ন ‘ভাইরাল’ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কারণ প্রশ্নে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদ শুভেন্দু ও নওশাদের যৌথ ব্যবসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাদের ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কারও পদবি উল্লেখ করা না হলেও পঞ্চায়েত ভোটের পরে এ প্রশ্নে অনেকে রাজনৈতিক অভিসন্ধি খুঁজে পাচ্ছেন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির যোগসূত্র নিয়ে অনেকদিন সরব শাসক দল তৃণমূল। এরই মধ্যে সমাজমাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হয়েছে প্রশ্ন। সেখানে উল্লেখ আছে, শুভেন্দু ও নওশাদ যথাক্রমে ১৫০০ ও ১০০০ টাকা দিয়ে একটি ব্যবসা শুরু করে। এক বছর পরে ব্যবসায় ৭৫ টাকা ক্ষতি হলে শুভেন্দুর ক্ষতি হয় (৪৫টাকা/৩০টাকা/ ২৫টাকা/৪০টাকা)। অর্থাৎ ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে শিক্ষার্থীকে।
প্রশ্নপত্রে স্কুলের নাম হিসেবে উল্লেখ রয়েছে মহেশপুর হাই স্কুলের। নন্দীগ্রামের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে মহেশপুর হাই স্কুল নামে একটি স্কুল আছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস দাস বলেন, ‘এই প্রশ্নপত্র আমার স্কুলের। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। তবে প্রশ্নে এখনও পরীক্ষা হয়নি। প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করা হবে। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট দু’জন শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’
ওই স্কুলের গণিতের শিক্ষক রাজীব বলেন, ‘আমি যে প্রশ্নপত্র তৈরি করে জমা দিয়েছি স্কুলে তার সঙ্গে ভাইরাল হওয়া প্রশ্নপত্রের কোনও মিল নেই।’ প্রশ্নটি পাটিগণিতের লাভ-ক্ষতির। রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির বড় নির্ধারক পাটিগণিত। কারও পদবি উল্লেখ নেই। তবে শুধু নামেই তুফান উঠছে রাজনীতিতে।
ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি দেখেছি। কবেকার প্রশ্নপত্র, সেটা তো বলতে পারব না। দেখলাম দশম শ্রেণির অঙ্কের বইয়ে ২০৪ নম্বর পৃষ্ঠাতেও অনেক আগে থেকেই নাম রয়েছে। যদি জেনে বুঝে আমাদের নাম দিয়ে করে, তা হলে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। তবে এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। আবার এমন হতে পারে আমার নামটা ওদের ভাল লেগেছে, তাই করেছে।’
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘তৃণমূল বাচ্চাদের মধ্যেও রাজনীতি ঢুকিয়ে দিচ্ছে।’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘রাজনীতির ময়দানটা পুরোপুরি আলাদা। স্কুলের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে রাজনীতির কোনও মিল থাকুক, তা কাম্য নয়। যে বা যারাই করুক এটা করা উচিত হয়নি।’ আনন্দবাজার।