সরকারি নির্দেশেও আতঙ্কে খোলেনি মণিপুরের বেশিরভাগ স্কুল
প্রভাবশালী গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইয়ের মধ্যকার দীর্ঘ দুই মাসের সংঘর্ষ শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায় রাজ্য সরকার স্কুল খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিলেও মণিপুরের বেশিরভাগ স্কুলকেই তা মানতে দেখা যায়নি।
ভারতের এ রাজ্যটির সরকার বুধবার (৫ জুলাই) থেকে স্কুল খোলার নির্দেশ দিলেও এদিন সকালে অধিকাংশ স্কুলেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী কিংবা কোনো কর্মচারীকে দেখা যায়নি। পাহাড়ি এ রাজ্যটির বেশিরভাগ অংশে সহিংসতা থিতিয়ে এলেও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী কিছু এলাকায় এখনও বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যেই রাজ্যের শাসকদল বিজেপি বুধবার থেকে ৫ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
ভয়ঙ্কর এ পরিস্থিতিতে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ইচ্ছুক নয় অভিভাবকেরাও। এ নিয়ে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের ব্যবসায়ী ইবোতম্বি সিং বলেছেন “মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে, যে কারণে আমরা আমাদের শিশুদের স্কুলে পাঠাতে রাজি হইনি”
আরও পড়ুন: ৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল এ মাসেই
উল্লেখ্য, মণিপুরের দুই প্রভাবশালী গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইয়ের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ফেব্রুয়ারিতে ভারতের একটি আদালত কুকিদের জন্য থাকা বিশেষ সুবিধাগুলো মেইতেইদেরও দেওয়ার নির্দেশ দিলে দুই গোষ্ঠীর বিরোধ চরমে ওঠে।
রাজ্যটিতে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই গোষ্ঠীগত সংঘাত এরই মধ্যে অন্তত ১১৮ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, বাস্তুচ্যুত করেছে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষকে। সংঘর্ষ থামাতে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকদফা শান্তি আলোচনা হলেও, শেষ পর্যন্ত তা সমাধান আনতে পারেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘কঠোর পরিশ্রম’ ও অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করতে বললেও বিবদমান দুটি গোষ্ঠী মিয়ানমার থেকেও সাহায্য পাচ্ছে সন্দেহ করে অনেকেই উদ্বিগ্ন।
ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব গিরিধর আরমানি ও মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং কয়েকদিন আগেই তাদের নিজ নিজ ভূখণ্ডে অপর দেশের জন্য ক্ষতিকারক এমন কিছুর অনুমতি না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।