বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেম নিষিদ্ধ, গল্প করলেও অভিভাবককে ফোন
কলকাতার প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্রেম করা বারণ! শিক্ষার্থীরা এমন অভিযোগ তুলছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ছাত্র-ছাত্রীকে ‘প্রাইভেট মোমেন্ট’ কাটাতে দেখলেই করা হচ্ছে অভিভাবককে কল। অনুশাসন আর পরম্পরার নামে এখন ঠিক ‘মহব্বতে’র গুরুকুল হয়ে গেছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, বলছেন সমালোচকেরা। এ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় সর্বত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র সংগঠনও এ ঘটনার সমালোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পড়ুয়া-যুগলদের দেখলে কর্তৃপক্ষের নীতি-পুলিশির অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব শিক্ষার্থীদের একাংশ। এবার কর্তৃপক্ষের তৈরি খসড়া আচরণ-বিধির (কোড অব কন্ডাক্ট) বিরোধিতা করলেন পড়ুয়ারা।
ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং আইসি সদস্যদের অভিযোগ, ওই খসড়া আচরণ-বিধির অনেক অংশই আপত্তিকর। তা মানতে আপত্তি রয়েছে তাঁদের। আচরণ-বিধিতে রয়েছে— কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মিটিং–মিছিল করা যাবে না। প্রাক্তনীরা রেজিস্টারে স্বাক্ষর না করে ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন না। কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে প্রেসিডেন্সি সংক্রান্ত কোনও অডিয়ো-ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দেওয়া যাবে না।
নিরাপত্তারক্ষীরা ক্যাম্পাসের যে কোনও জায়গায় শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইতে পারেন এবং সেটি না দেখালে আচরণ-বিধি ভাঙা হচ্ছে বলে ধরা হবে। প্রেক্ষাগৃহ বুকিংয়ের আগে অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০০ বছরের প্রেসিডেন্সির মুক্ত পরিবেশকে এভাবে বদ্ধ করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসএফআই ইউনিটের সম্পাদক ঋষভ সাহা শনিবার বলেন, ‘এ ধরনের স্বৈরাচারী কার্যকলাপ মানব না। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, প্রাক্তন, গবেষকদের মতামত সংগ্রহ করা শুরু করেছি।’
প্রতিবাদ জানাচ্ছে ছাত্র সংগঠন আইসি-ও। অহন কর্মকার বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদের চলাফেরা নজরে রাখতে আচরণ-বিধির প্রয়োজনীয়তা কোথায়? সেটা বুঝতেই আমরা অপারগ। এই আচরণবিধি আরোপ করার আগের কয়েক মাসে একাধিক যুগলকে ডিন অব স্টুডেন্টস-এর অফিসে ডেকে পাঠানো, বাড়িতে চিঠি পাঠানো, বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করার ঘটনা ঘটেছে।’
প্রেসিডেন্সির ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণ মাইতি বলেন, ‘খসড়াটি পড়ুয়াদের দেওয়া হয়েছে। ওরা আগে ওদের মতামত জানাক।’