২৩ জুন ২০২৩, ১৬:৪০

সৌদির পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন, রয়েছে ইহুদী-খ্রিষ্টানদের নিয়ে ইতিবাচক বার্তা 

সৌদি শিক্ষার্থীরা  © ইন্টারনেট

সৌদি আরবের পাঠ্যবইতে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর মনিটরিং পিস অ্যান্ড কালচারাল টলারেন্স ইন স্কুল এডুকেশন (ইমপ্যাক্ট-এসই)।  গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির মতে দেশটির পাঠ্যবইয়ে ক্রমশ নারী-পুরুষের অধিকার সম্পর্কিত বিষয়, অন্য ধর্মের প্রতি ইতিবাচক ধারনাসহ শান্তি ও সহিষ্ণুতার বার্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো বৃদ্ধি করা হচ্ছে। 

ইসরায়েল ও লন্ডনভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বজুড়ে পাঠ্যবইতে ইহুদি ধর্মাবলম্বী ও ইসরায়েলকে কীভাবে উপস্থাপন করা হয়, তা পর্যবেক্ষণ করে। ইমপ্যাক্ট-এসইর প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি পাঠ্যপুস্তকের সর্বশেষ সংস্করণগুলোতে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সম্পর্ককে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করার প্রচলিত ধারা থেকে বের হয়ে এসেছে কর্তৃপক্ষ।  সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব বিষয়গুলো পাঠ্যপুস্তক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে 'খ্রিষ্টান ও ইহুদিরা ইসলামের শত্রু' এমন ইঙ্গিতপূর্ণ বর্ণনা, অথবা 'তাওরাত ও ইঞ্জিল শরীফকে বিকৃত করার অভিযোগে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সমালোচনামূলক' লেখা।

আরো পড়ুন: পদ আইসিটি, নিয়োগে প্রাধান্য পেয়েছে সিএসই

ইমপ্যাক্ট-এসই'র পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন বিষয়ে বর্ণনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, কিন্তু এখনো ইসরায়েলকে পূর্ণ গ্রহণযোগ্যতা দেওয়া হয়নি। 'ইসরায়েলি শত্রু' কিংবা 'ইহুদি শত্রু'র মতো নেতিবাচক শব্দের পরিবর্তে 'ইসরায়েলি দখলদারিত্ব' অথবা 'ইসরায়েলি দখলদারি সেনা' ব্যবহার করা হয়েছে।

তবে কিছু বইতে ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে দেওয়ার প্রচলিত ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আবার বইগুলোতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের হলোকাস্ট বা ইহুদি গণহত্যার বর্ণনা যথারীতি অনুপস্থিত রয়েছে বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ইমপ্যাক্ট-এসই দাবি করেছে, এসব পরিবর্তন 'ইসরায়েল ও ইহুদিদের প্রতি সৌদি জনগোষ্ঠীর দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে'। এই সংগঠন ২০০০ এর দশকের শুরু থেকেই সৌদি পাঠ্যপুস্তক নিরীক্ষা করছে। প্রতিবেদন তৈরির জন্য তারা ২০২২-২৩ কারিকুলামের ৮০টি এবং এর আগের কারিকুলামের ১৮০টি পাঠ্যপুস্তক নিরীক্ষা করেছে।

আরো পড়ুন: এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই একটিও, ১৮৬ হয়ে দেশসেরা ঢাবি

ইমপ্যাক্ট-এসই আরও জানিয়েছে, নতুন সৌদি পাঠ্যবইতে হিজবুল্লাহ, ইসলামিক স্টেট, আল কায়েদা, মুসলিম ব্রাদারহুড ও হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ে কিছু সমালোচনামূলক প্রবন্ধ ও বর্ণনা যুক্ত করা হয়েছে।মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌদি পাঠ্যবইয়ে এ ধরনের পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য, কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা জরুরি।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনার পর সৌদি পাঠ্যপুস্তক পশ্চিমা বিশ্বের কড়া নজরদারির আওতায় আসে। অভিযোগ মতে, ওই জঙ্গি হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী ১৯ জনের মধ্যে ১৫ জনই ছিলেন সৌদি নাগরিক।