এক বছর পায়ে হেঁটে হজ করতে মক্কায় পৌঁছেছেন সেই শিহাব
ভারতের কেরালা রাজ্যের জেলা মালাপপুরাম শহরে বাস করেন একজন মুসলিম যুবক। নাম শিহাব চতুর। তার ইচ্ছা পায়ে হেঁটে হজ করবেন। কিন্তু তার বাড়ি থেকে মক্কা নগরীর যে দূরত্ব, তাতে পায়ে হেঁটে হজ করা মোটেই সহজ নয়। এজন্য তিনি অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে শেষ পর্যন্ত তার যাত্রায় সফল হয়েছেন। ৩৭০ দিনে ৮ হাজার ৬৪০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে তিনি পবিত্র মক্কায় পৌঁছায়। এ পথ পাড়ি দিতে তিনি পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, কুয়েত অতিক্রম করেছেন।
শিহাব চত্তুর কেরালার মেলাপপুরাম জেলার বাসিন্দা। শিহাব একটি সুপার মার্কেট পরিচালনা করেন। ছোটবেলা থেকেই পায়ে হেঁটে হজ করা হাজিদের গল্প শুনে বড় হয়েছেন। সেজন্য তার ইচ্ছা ছিল পায়ে হেঁটে হজ করার। এরপর উপযুক্ত সময়ে তিনি নিজ ইচ্ছা পূরণে মনোযোগ দেন।
২০২২ সালের ২ জুন হজ করার উদ্দেশ্যে তিনি পায়ে হেঁটে মক্কায় যাওয়ার জন্য বের হন। শেষ পর্যন্ত তিনি চলতি মাসে মক্কায় পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন। সৌদি আরবে প্রবেশের পর শিহাব মদিনা যান। মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পর সেখানে তিনি ২১ দিন থাকার কথা জানিয়েছেন।
মক্কা থেকে মদিনার দূরত্ব ৪৪০ কিলোমিটার। এ পথ তিনি পায়ে হেঁটে ৯ দিনে পাড়ি দিয়েছেন। চলতি মাসেই তিনি পবিত্র হজ পালন করবেন। এ মাসেই তার মা জয়নবও হজ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা যাবেন। মা ও ছেলে এক সঙ্গেই হজ পালন করবেন। কেরাল থেকে মক্কা যাওয়ার সময় তিনি একটি ইউটিউব চ্যানেল চালু করেন। সেখানে তিনি প্রতিদিন আপডেট তথ্য শেয়ার করতেন। অনেক মানুষ তার চ্যানেলটি অনুসরণ করতেন।
সৌদি আরবের টিভি চ্যানেল আল-এখবারিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শিহাব বলেন, তার যাত্রা সহজ ছিল না। সেপ্টেম্বরে যখন তিনি পাঞ্জাবের ওয়াঘা সীমান্তে পৌঁছান, তখন তার ভিসা না থাকায় পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ আটকে দেয়। এরপর তিনি ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করেন। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে বেশ কয়েক মাস সময় লেগে যায়।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে হজে গিয়ে প্রাণ গেল ১০ বাংলাদেশির
তিনি বলেন, এই সময় তিনি আফিয়া কিডস স্কুল, খাসা, অমৃতসর, পাঞ্জাব প্রভৃতি অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শিহাব ট্রানজিট ভিসা পেতে সক্ষম হন। এরপর তিনি পাকিস্তানে প্রবেশ করেন। সেখানে একটি ছোট বিরতির পর ফের সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। চার মাস পর হজের গন্তব্যে পৌঁছতে সক্ষম হন। তিনি যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন, তার মধ্যে ইরানের ঠাণ্ডা আবহাওয়া ছাড়াও কিছু শিকারী প্রাণী ছিল।
তিনি তার এ সফরের মাধ্যমে বার্তা দিতে চান, ‘যে কেউ ভালো উদ্দেশ রাখে, সে তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে।’