বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষা দিয়েই পার করলেন জীবনের চার দশক!
সবে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি টপকানো বাংলাদেশি কোনো শিক্ষার্থী নন তিনি। কোটিপতি ব্যবসায়ী হিসেবে ইতোমধ্যে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার আছে তার। ৫৬ বছর বয়সের চল্লিশ বছর ধরে এ নিয়ে ২৭ বার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পরীক্ষায় বসেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির কাঙাল এই চীনা কোটিপতির নাম লিয়াং শি।
‘গাওকাও’ নামের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ এ পরীক্ষা দিয়েই চলেছেন তিনি। দেশটিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা গাওকাও নামে পরিচিত। বুধবার (৭জুন) অনুষ্ঠিত গাওকাও'য়ে অংশ নেন রেকর্ড ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী।
১৯৮৩ সালে প্রথমবার যখন গাওকাও পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তখন তার বয়স মাত্র ১৬। পরবর্তী দশক গুলোতে স্কোর বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু, ১৯৯২ সালে হাল ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাকে, কারণ সেবছর থেকে পরীক্ষাটি কেবলমাত্র ২৫ বছরের কম বয়স্কদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল।
তবে ২০০১ সালে এই বয়সসীমা তুলে দেয় সরকার। দরজা খুলে গেলে আবারও পরীক্ষা দিতে নেমে যান লিয়াং। ২০১০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি বছরই তিনি গাওকাও পরীক্ষায় বসেছেন।
৪০ বছর ধরে গাওকাও পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেও জীবনে কিন্তু দারুণ সফল লিয়াং শি। প্রথম জীবনে কারখানায় সামান্য বেতনের চাকরি করলেও নিজের ব্যবসা দাঁড় করিয়ে কোটিপতি হয়ে গেছেন তিনি। এসব চাপিয়ে তার স্বপ্ন সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে 'গাওকাও' পরীক্ষায় যথেষ্ট নম্বর পাওয়া। সেজন্য ২৭ বার ব্যর্থ হয়েও তিনি হার মানতে রাজি নন।
জানা যাচ্ছে, গত কয়েক মাস ধরে রীতিমতো ‘তপস্বী সন্ন্যাসীর জীবন’ যাপন করছেন তিনি। সকাল থেকে দিনে ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করছিলেন শি। লিয়াং বলেন, আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারব না, এটা ভাবতেই অস্বস্তি লাগে। আমি আসলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই এবং একজন পণ্ডিত হতে চাই।
চীনের সিচুয়ানের প্রদেশের বাসিন্দা গত চার দশকে ২৬ বার গাওকাও ভর্তি পরীক্ষায় বসেছিলেন। তবে প্রতিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে প্রয়োজনীয় নম্বর পেতে ব্যর্থ হন লিয়াং। চীনা শিক্ষার্থীদের জন্য জীবনের গতিপথ নির্ধারণ করতে একটা ভাল গাওকাও ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে ভাল ফলাফল করলেই চীনের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রির পথ খুলে যায়। পড়াশুনা শেষে সুযোগ থাকে ভাল চাকরিরও।